মানুষ শখের বশে অনেকেই বিভিন্ন দেশ-বিদেশে ভ্রমণ করেন ট্রেন, বাস, রিকশা-ভ্যান, মোটরসাইকেল কিংবা বাইসাইকেলে। এক সময় মানুষ গরুর গাড়ি, ঘোড়া গাড়ি, হাতি ও উটের পিঠে চড়েও ভ্রমণ করতেন।
কিন্তু গাইবান্ধার সদর উপজেলার গোবিন্দপুর এলাকার বাবা-ছেলের জুটি একটু ভিন্নভাবে বের হয়েছেন দেশ ভ্রমণে।
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন সাদেক আলী সরদারের ব্যতিক্রমধর্মী এ ভ্রমণে সঙ্গে নিয়েছেন ছেলে মোস্তাফিজুর রহমানকে।
গাইবান্ধা থেকে হাতীবান্ধার উদ্দেশ্যে ১৫০ কিলোমিটার পথ হেঁটে পাড়ি দেয়ার জন্য রওনা দিয়েছে বাবা-ছেলের জুটি।
মঙ্গলবার ভোর ৫টায় গাইবান্ধা থেকে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার উদ্দেশ্যে রওনা দেন বাবা ও ছেলে। গাইবান্ধা হতে লালমনিরহাটের দূরত্ব ৯০ কিলোমিটার। এ পথ পাড়ি দিয়ে তারা লালমনিরহাটে এসে পৌঁছান রাত ১০টায়। পরে তারা ১৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হাতীবান্ধার উদ্দেশ্যে রওনা হন।
বাবা-ছেলের ৩৬তম মিশন এটি। ছবি:নিউজবাংলা
ইতোমধ্যে এক হাজার কিলোমিটার পথ হেঁটে পাড়ি দিয়েছেন এই বাবা-ছেলে। শখ এবং শরীর চর্চা তাদের মূখ্য উদ্দেশ্য। এর আগে ৩৫ বার হেঁটে বিভিন্ন স্থানে গিয়েছেন তারা। এটি তাদের ৩৬তম মিশন বলেও জানান নিউজবাংলাকে।
পরবর্তীতে তাদের সফর পঞ্চগড়, সিলেট ও কক্সবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে।
ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাবার প্রতি ভালবাসাটাই এখানে কাজ করেছে আমার। উনাকে আমি আমার বন্ধুর মতো দেখি। ছোট বেলা থেকে আমরা দুই ভাই বাবার সঙ্গে বন্ধুর মতো চলি। বাবার বয়স হয়ে গেছে, তাই তাকে একলা ছাড়তে পারি না। বাবার সঙ্গে হেঁটে পথ চলছি, এতে করে আমার শরীরেরও চর্চা হচ্ছে। শরীর ঠিক রাখতে শরীর চর্চার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি। আগামীতে আমাদের আরও অনেক জায়গায় যাওয়ার পরিকল্পনা আছে। বাবার প্রতি দায়িত্ববোধ ও ভালবাসা আছে বিধায় হাজার মাইল পথ পাড়ি দিতে ক্লান্তি বা অনীহা আসছে না।’
তিনি জানান, আগামীতে বিদেশে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
সাদেক আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি আর্মির রিটায়ার্ড অফিসার। পথ চলতে ভয় করি না। আমার দুই ছেলে এক মেয়ে। বড় ছেলে ব্যবসা করে। ছোট ছেলেও আর্মি অফিসার ও মেয়ে হাইস্কুলে চাকরি করে। ৩৩ বছরের চাকুরি শেষে বাড়িতে বসে বসে সময় কাটাতে ভালো লাগে না। শরীরও যেন অকেজো হয়ে পড়ছে। তাই এই হেঁটে ভ্রমণ।’