ঘুষ নেয়ার মামলায় পুলিশের বরখাস্ত হওয়া উপমহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে ৩ বছর এবং দুদকের বরখাস্ত পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে ৮ বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম বুধবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আলোচিত মামলাটির রায় পড়ে শোনান।
রায়ে ঘুষ লেনদেনের দায়ে মিজানকে দণ্ডবিধির ১৬১ ধারায় ও বাছিরকে দণ্ডবিধির ১৬৫(এ) ধারায় তিন বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।
আর মানি লন্ডারিং আইনের ৪(২) ধারায় বাছিরকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড ও ৮০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বাছিরের দুটি দণ্ড একসঙ্গে চলবে বলে তাকে পাঁচ বছর দণ্ড ভোগ করতে হবে৷
তবে দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় উভয়ে দোষী সাব্যস্ত হলেও একই ধরনের অভিযোগে দণ্ডিত হওয়ায় এই ধারায় কাউকেই সাজা দেয়া হয়নি।
দুদকের পক্ষে মোশাররফ হোসেন কাজল ও আসামিপক্ষে এহসানুল হক সমাজী রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মোশাররফ হোসেন কাজল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ক্ষমতার অপব্যবহার, ঘুষ, দুর্নীতি বিষয়টি মামলায় প্রমাণ হয়েছে।’
আসামিদের পক্ষে আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী, আবুল হাসেম ভূঁইয়া ও গোলাম মহিউদ্দিন প্রিন্স জানান, তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।
এ ছাড়া মিজানের পক্ষে আইনজীবী আবুল হাসেম বলেন, ‘চার বছর ধরে মিজান কারাগারে আছেন। তাই তার সাজা স্বাভাবিকভাবে আর নেই। সাজা খাটা শেষ হয়েছে।’
দণ্ড ঘোষণার সময় ডিআইজি মিজানকে বেশ হাসিখুশি ও বাছিরকে বিমর্ষ দেখাচ্ছিল।
১০ ফেব্রুয়ারি আসামি ও দুদকের আইনজীবীরা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। পরে আদালত আজ বুধবার রায়ের জন্য তারিখ দেয়।
গত ৩ জানুয়ারী আত্মপক্ষ শুনানিতে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন মিজানুর রহমান এবং এনামুল বাছির। পরে ১২ জানুয়ারি আসামিরা তাদের লিখিত বক্তব্য জমা দেন।
গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর মামলাটিতে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।
মামলার অভিযোগভুক্ত ১৭ সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্য নেয় আদালত।
৪০ লাখ টাকার ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগে ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্লাহ বাদী হয়ে মামলা করেছিলেন। ২০২০ সালের ১৯ জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন শেখ মো. ফানাফিল্লাহ।
ওই বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র নেন ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ। এরপর আদালত চার্জ গঠনের তারিখ দিয়ে মামলা ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বদলির আদেশ দেন।
২০২০ সালের ১৮ মার্চ আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত।