ঠাকুরগাঁওয়ে বালিয়াডাঙ্গীর সঙ্গে পাড়িয়া ইউনিয়নের যোগাযোগব্যবস্থা সহজ করতে ৩০ বছর আগে নির্মিত হয়েছিল সড়ক। এরপর থেকে সংস্কার করা হয়নি সড়কটি। এতে খানাখন্দে ভরা জরাজীর্ণ সরু রাস্তার দুই ধারে ঢালু হওয়ায় প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
উপজেলার ঐতিহ্যবাহী লাহিড়ী বাজার থেকে পাড়িয়া ইউনিয়ন যাওয়ার যোগাযোগের একমাত্র সড়ক এটি। যানবাহন ও মানুষের চলাচলের জন্য সড়কটি সংস্কার ও প্রশস্ত করা এখন সময়ের দাবি বলে মনে করছেন চালক ও স্থানীয়রা।
স্থানীয় সুরেশ পাল বলেন, ‘দিন দিন জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় সড়কে বেড়েছে যানবাহনের সংখ্যাও। সেই তুলনায় সড়কটি এতটাই সরু যে, একটি ছোট ট্রাক বা অটোরিকশাও অভারটেক করা যায় না।
‘একটি গাড়িকে থামিয়ে আরেকটিকে যেতে হয়, নয়তো গাড়িসহ পড়তে হয় খালে। এ ছাড়া এ সড়কে ১৫ মিনিটের পথ এখন পারি দিতে ঘণ্টারও বেশি সময় লাগে।’
যাত্রী মরিয়ম বেগম জানান, কেউ হঠাৎ অসুস্থ হলে বা রোগীদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায় না। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন গর্ভবতীরা। মাতৃত্বকালে বারবার শহরে ডাক্তার দেখাতে যান তারা। অথচ অন্য উপায় না থাকায় বাধ্য হয়ে তাদের ঝুঁকি নিয়ে এ সড়ক দিয়েই যেতে হয়।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ সড়কে ইজিবাইক চালান হাসান ড্রাইভার। তিনি বলেন, ‘রাস্তাটি খুবই উঁচু-নিচু আর খানাখন্দে ভরা। যেকোনো সময় গাড়ি উল্টে যাওয়ার ভয় থাকে। এর আগে বেশ কয়েকবার মারাত্মক দুর্ঘটনাও ঘটেছে।’
তাই কর্তৃপক্ষের কাছে রাস্তাটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
খানাখন্দে ভরা সড়কে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। ছবি: নিউজবাংলা
স্থানীয় কৃষক আফিজ উদ্দীন বলেন, ‘এই অঞ্চলটি মূলত কৃষিপ্রধান অঞ্চল। কৃষকের মালামাল ব্যবহারের জন্য সড়কটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। রাস্তাটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় যানবাহন চালকরাও দ্বিগুণ ভাড়া নেন। রাস্তাটি প্রশস্ত করা হলে আমরা কৃষকরা এর সুফল ভোগ করতে পারব।’
স্থানীয় ব্যবসায়ী আমির খুশরু বলেন, ‘রাস্তার বেহাল দশা হওয়ায় এখানে বড় বড় ব্যবসায়ীরা মালামাল আনা-নেয়া করতে চান না। রাস্তাটি সংস্কার করা জরুরি হয়ে পড়েছে।’
এদিকে সড়ক সংস্কার ও প্রশস্ত করার বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলার প্রকৌশলীকে বলেও কোনো কাজ হয়নি অভিযোগ এনেছেন পাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বী।
তিনি বলেন, ‘রাস্তাটি সংস্কার করা খুবই জরুরি। জনগণের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। তাই আবার কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষণ করছি।’বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা প্রকৌশলী মাইনুল ইসলাম বলেন, ‘সড়কটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এতে জনগণের অনেক ভোগান্তি হচ্ছে। এটি সংস্কার করতে এরই মধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ৬ মাসের মধ্যেই সংস্কারের কাজ শুরু হবে।’