দেশে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ধরে রাখতে এ খাতে আরোপিত বিভিন্ন ধরনের শুল্ক-কর ছাড়ের দাবি জানিয়েছে এফবিসিসিআইয়ের পর্যটন বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটি।
মঙ্গলবার মতিঝিলে শীর্ষ ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআই ভবনে আয়োজিত বৈঠকে এ দাবি জানান স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা।
তারা জানান, করোনা মহামারিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পর্যটন শিল্প। বিশেষ করে হোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউজগুলোর ব্যবসা প্রায় ধ্বংসের মুখে।
তারা আরও বলেন, বিদেশি পর্যটকদের আধুনিক সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে যেসব সরঞ্জাম ও পণ্য আমদানি করতে হয়, সেগুলোর ওপর বিপুল পরিমাণে শুল্ক দিতে হয়।
পর্যটন একটি সেবা খাত। ফলে সেবার বিপরীতে ভ্যাট পরিশোধ করতে হয়। আবার আয়ের ওপরও দিতে হয় ৩৫ শতাংশ কর।
মঙ্গলবার মতিঝিলে শীর্ষ ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআই ভবনে আয়োজিত বৈঠকে ভার্চুয়ালি অংশ নেন সংগঠনের পর্যটন বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা। ছবি: নিউজবাংলা
বিপুল পরিমাণ শুল্ক-করের চাপে এ খাতের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাই, এ শিল্পের সুরক্ষায় শুল্ক ও করে ছাড় দেয়ার বিষয়ে সরকারকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে।
বিদেশি পর্যটকদের বাংলাদেশে আকর্ষণ করতে ফ্লাইট পূর্ববর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে করোনা পরীক্ষা বাধ্যবাধকতা শিথিল ও ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার দাবি জানান স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা।
বাংলাদেশে পর্যটনের বিকাশে অপর্যাপ্ত ব্র্যান্ডিংকে দায়ী করেন কমিটির সদস্যরা।
ট্যুরিজম বোর্ডের মাধ্যমে পর্যটন খাতে বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিং করার তাগিদ দেন বক্তারা।
এজন্য বাজেটে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়।
এছাড়া গেস্ট হাউজ উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ আসে বৈঠকে।
বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যোগ দেন এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু।
তিনি বলেন, করোনা মহামারিতে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত খাতগুলোর মধ্যে হোটেল, মোটেল, গেস্টহাউজ অন্যতম।
বিদেশি মুদ্রা অর্জনেও এইখাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। স্ট্যান্ডিং কমিটিকে এ খাতের সম্ভাবনা, সমস্যা ও সম্ভাব্য সমাধান বের করে প্রস্তাবনা আকারে এফবিসিসিআইতে জমা দেয়ার আহ্বান জানান মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু।
তিনি জানান, প্রস্তাবনা বিবেচনা করে সরকারের নীতি নির্ধারণী মহলে এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে।
কমিটির চেয়ারম্যান খবির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জাতিসংঘ ঘোষিত ১৭টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অন্তত ৩টি পর্যটনের উন্নয়নের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। বাকি লক্ষ্যমাত্রাগুলোর অর্জনও পরোক্ষভাবে পর্যটনের উন্নয়নের ওপর নির্ভরশীল। তাই ২০৩০ সাল নাগাদ এসডিজি অর্জন করতে হলে দেশের পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন ঘটাতে হবে।’
হোটেল, রিসোর্টে পর্যটকদের যৌক্তিক দামে মানসম্মত সেবা নিশ্চিতের আহ্বান জানান এফবিসিসিআই’র পরিচালক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসাইন।
একইসঙ্গে দক্ষ জনবল তৈরিতে প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষানবীশ প্রশিক্ষণ, স্যুভেনির ও প্রকাশনা তৈরির তাগিদ দেন তিনি।
এফবিসিসিআইয়ের মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক বলেন, পর্যটনের উন্নয়নে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে আসছে ফেডারেশন চেম্বার।
বাংলাদেশের পর্যটনের উন্নয়নে কানাডা-বাংলাদেশ যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের আলোচ্যসূচিতেও এখাতকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিটির কো-চেয়ারম্যান খন্দকার রুহুল আমিন, তৌফিক উদ্দিন আহমেদ, মহিউদ্দীন হেলাল, এ এইচ এম আমিনুল ইসলাম ভুঁইয়া, মো. মাহবুব আলম, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, মেহেদী আমিন চৌধুরীসহ অন্যান্য সদস্যরা।