বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

থানায় ‘নির্যাতনে মৃত্যু’: এবার পুলিশের তদন্ত কমিটি

  •    
  • ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৯:১২

জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, কারও কোনো গাফিলতি বা উসকানি আছে কি না তা খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের কমিটি করেছে পুলিশ। কমিটিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইদ আনোয়ারকে প্রধান করা হয়েছে। তিন কার্য দিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে থানায় নির্যাতনে চুরির মামলার আসামি উজির মিয়ার মৃত্যুর অভিযোগ তদন্তে এবার কমিটি করল পুলিশ।

জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় কারও কোনো গাফিলতি বা উসকানি আছে কি না তা খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। কমিটিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইদ আনোয়ারকে প্রধান করা হয়েছে। তিন কার্য দিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এর আগে এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে জেলা প্রশাসন।

জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গির হোসেনের সই করা অফিস আদেশে মঙ্গলবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার উল হালিমকে প্রধান করে গঠিত কমিটিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়নাল আবেদিন ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের একজন চিকিৎসককে রাখা হয়েছে। ২৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার উল হালিম নিউজবাংলাকে জানান, কমিটি মঙ্গলবার থেকেই কাজ শুরু করছে।

চুরির মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে জামিনে মুক্তি পাওয়ার ১১দিন পর হাসপাতালে ভর্তি উজির মিয়ার মৃত্যু হয় সোমবার। স্বজনরা অভিযোগ করেন, গ্রেপ্তার অবস্থায় পুলিশ তাকে নির্যাতন করেছে। এর ধকলেই তিনি অসুস্থ হন এবং মারা যান।

উপজেলার পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের শত্রুমর্দন (বাঘেরকোনা) গ্রামে উজির মিয়ার বাড়ি। তিনি ছিলেন কৃষক।

তার পরিবারের অভিযোগ, শান্তিগঞ্জ থানার তিন এসআই দেবাশীষ রায়, পার্টন চন্দ্র দাস ও আক্তারুজ্জামান মিথ্যা মামলা দিয়ে উজির মিয়াকে হাজতে নিয়ে নির্যাতন করেছেন।

এই কষ্ট সহ্য না করতে না পেরেই তার মৃত্যু হয়েছে।

উজির মিয়া জামিনে মুক্ত হওয়ার পর এবং আটকের পরদিন আদালতে তোলার সময়কার কয়েকটি ছবি নিউজবাংলার হাতে এসেছে। এসব ছবিতে উজির মিয়ার শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারধর ও জখমের চিহ্ন দেখা গেছে। এ ছাড়া তার মাথায় ডান দিকে একটি বড় আঘাতের চিহ্নও দেখা গেছে।

তার মৃত্যুর পর অভিযুক্ত তিন পুলিশ সদস্যের বিচার দাবিতে সোমবার মরদেহ নিয়েই মানববন্ধন ও পাগলা এলাকার সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করেন এলাকাবাসী। এর মধ্যে একটি গাড়ি সেই মরদেহকে চাপা দিয়ে এগিয়ে যায়।

গাড়িটিতে বসা ছিলেন স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তবে গাড়িটি উপজেলার সহকারী কমিশনারের।

এতে অবরোধে বসা জনতা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। তারা মাটিতে বসে চালকের বিচার দাবি করতে থাকে।

গাড়িতে বসেছিলেন দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনোয়ার উজ জামান। তিনি দাবি করেছেন, তাকে বহনকারী গাড়ি মরদেহকে চাপা দেয়নি। জনতা তার গাড়িতে হামলা করেছিল। চালক তখন মরদেহটি পাশ কাটিয়ে গেছে।

তবে এ ঘটনার দুটি ভিডিও ক্লিপ হাতে এসেছে নিউজবাংলার। এতে দেখা যায়, শান্তিগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার সখিনা আক্তারের গাড়ি আসে ঘটনাস্থলে। জনতা গাড়িটিকে সামনে যেতে বাধা দিলে চালক না থেমে রাস্তায় রাখা উজির মিয়ার লাশকে চাপা দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। সে সময় জনতা রাস্তায় নেমে এলে তাদের ওপর দিয়েও চালিয়ে যাওয়া হয় গাড়িটি। তবে সে সময় তারা বাধা না দিয়ে রাস্তা ছেড়ে দেয়।

প্রত্যক্ষদর্শী উজির মিয়ার চাচা মখলেছুর রহমান বলেন, ‘লাশটা রাস্তায় রাখা। ইউএনও সাহেব তো নামিয়া আমরার কথা শুনতে পারতা। কিন্তু তাইন গাড়ি দিয়া মরা লাশটারে চাপা দিয়া গেলা। আমরা এমন ইউএনও চাই না।’

জানতে চাইলে স্থানীয়দের অভিযোগ অস্বীকার করে ইউএনও মো. আনোয়ার উজ জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মরদেহকে গাড়ি চাপা দেয়া হয়নি। উত্তেজিত জনতা আমার গাড়ির দিকে হামলা চালায় এবং গাড়ির কাচে আঘাত করতে থাকে। এ সময় ড্রাইভার লাশটির পাশ কাটিয়ে চলে যায়। যারা এই অভিযোগ করছেন সেগুলো মিথ্যা। এমন কিছু সেখানে হয়নি।’

এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ। তারা সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচারের দাবি জানিয়েছেন।

এ বিভাগের আরো খবর