বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের পর্যাপ্ত বাজেট থাকলেও সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রেখেছে। এসব বিল আদায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রয়োজনে বিল আদায়ে সংযোগ বিচ্ছিন্নেরও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় তিনি এ নির্দেশ।
শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী।
সভায় জানানো হয়, সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে এখন প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকার বেশি বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। এ ছাড়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেরও বিল বকেয়া রয়েছে।
একনেক সভা শেষে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া নির্দেশনাগুলো গণমাধ্যমকে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
তিনি বলেন, ‘পর্যাপ্ত বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠান গ্যাস-বিদ্যুতের বকেয়া পরিশোধ করছে না। এমনকি অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও প্রচুর বকেয়া রয়েছে। এ জন্য এসব বকেয়া আদায়ের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। প্রয়োজনে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।’
একনেকে উপস্থিত একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘একনেক সভায় বকেয়া বিল আদায়ে কঠোর হতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এমনকি তিনি বলেছেন, বকেয়া পরিশোধ না করলে প্রয়োজনে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।’
গ্যাসের বিলও কয়েক হাজার কোটি টাকা বকেয়া থাকার কথা জানানো হয়।
সম্প্রতি সংসদে জানানো হয়, বর্তমানে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা গ্যাসের বিল বকেয়া রয়েছে।
একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ ও গ্যাসে ভর্তুকির পরিমাণ কমিয়ে আনার কথা বলেন। তিনি চান এই দুই খাতে ভর্তুকি কমিয়ে আনতে, তাই সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় কর্মকৌশল প্রণয়নের নির্দেশ দেন তিনি।
সরকারকে বিদ্যুৎ ও গ্যাসে একটা বড় অঙ্কের অর্থ ভর্তুকি দিতে হয়।
চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি খাতে ভর্তুকি ধরা রয়েছে সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা।
জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারের যে অবস্থা তাতে এই ভর্তুকিতে কুলানো সম্ভব হবে না। কারণ চলতি অর্থবছরের শুরুতে যেখানে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের ব্যারেলপ্রতি দাম ছিল ৪৫ ডলার সেখানে সেই তেল এখন বিক্রি হচ্ছে ৮০ ডলারে।
জ্বালানি ও বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে বছর শেষে জ্বালানি খাতে বাড়তি ১০ হাজার কোটি টাকা এবং এলএনজি খাতে ৬ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকির প্রয়োজন হবে।