বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জগন্নাথে ব্যতিক্রমী শহীদ মিনার

  •    
  • ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ২১:৩৯

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এ শহীদ মিনারটি ভাষা আন্দোলনের দাবিতে ছাত্রদের সংঘবদ্ধ সমাবেশের একটি চিত্র তুলে ধরা হয়েছে বলে অনেকেই মনে করেন।

পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থিত ভাষা শহীদদের স্মরণে নির্মিত শহীদ মিনার। এ শহীদ মিনারটির সঙ্গে দেশের অন্য শহীদ মিনারের নেই কোনো সাদৃশ্য। যে কেউ এটিকে স্থাপত্যশিল্প ভাবতে পারেন সহজেই।

দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শহীদ মিনারে তিন থেকে পাঁচটি বেদি থাকলেও জবির শহীদ মিনারের একটি প্রধানসহ মোট আটটি। প্রতিটি বেদি বৃত্তাকারে সাজানো। প্রত্যেকটি নিজ অবস্থানে পেছনের দিকের পাদদেশে কোমর ভেঙে হেলানো। প্রধান বেদিটি দাঁড়ানো অবস্থায় সামনের দিকে অর্ধনমিতভাবে রয়েছে।

শহীদ মিনারের নামফলক থেকে জানা যায়, ২০০২ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শহীদ মিনারের উদ্বোধন করেন তৎকালীন মৎস্য ও পশুসম্পদমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকা।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এ শহীদ মিনারটি ভাষা আন্দোলনের দাবিতে ছাত্রদের সংঘবদ্ধ সমাবেশের একটি চিত্র তুলে ধরা হয়েছে বলে অনেকেই মনে করেন।

এ ব্যাপারে ইতিহাসবিদ ও জবির ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সেলিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের শহীদ মিনারে কয়েকটি বেদি রয়েছে চারদিকে সাজানো। প্রত্যেকটি বেদি পেছনের দিকে হেলানো থাকলেও এর মাঝখানের বেদিটি দাঁড়ানো অবস্থায় রয়েছে। ওপরের একটু অংশ সামনের দিকে নুয়ে পড়েছে। মনে হয় এ থেকে সভা-সমাবেশের কোনো চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।’

সমাজকর্ম বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী আবদুল মন্নাফ জানান, ক্যাম্পাসে শহীদ মিনারটি ভিন্নধর্মী হওয়ায় তারা গর্বিত।

জবির এই শহীদ মিনার কবে স্থাপন করা হয় তার সঠিক তথ্য দিতে না পারলেও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা বলছেন, এটি ৯০ সালের পরে এবং বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণার আগ মুহূর্তে নির্মাণ করা হয়েছে।

সারা বছরই অরক্ষিত-অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় পড়ে থাকে জবির ব্যতিক্রমধর্মী এ শহীদ মিনার। ফেব্রুয়ারি মাস এলেই নড়ে বসে কর্তৃপক্ষ। ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের এক-দুদিন আগে করা হয় পরিষ্কার। এবারও ২১ ফেব্রুয়ারির আগে শহীদ মিনারের মূল বেদিসহ চারপাশের দেয়ালে থাকা বিভিন্ন পোস্টার ও জমে থাকা শ্যাওলা পরিষ্কার করা হয়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শহীদ মিনারের চারপাশে থাকা রেলিংগুলোর বেশির ভাগ নষ্ট হয়ে গেছে। অনেকেই এখানে খাবারের প্যাকেট, প্লাস্টিকের বোতল ফেলে যান। সিঁড়ির টাইলস বেশ কয়েক জায়গায় নষ্ট। দীর্ঘদিন কোনো যত্ন না নেয়ায় মিনারের সাদা রং উঠে কালো হয়ে গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, এটি আর সংস্কার করা সম্ভব নয়। নতুন ক্যাম্পাসে নতুন শহীদ মিনার স্থাপন করা হবে।

২০১৮ সাল পর্যন্ত জবির শহীদ মিনারটির সামনে বড় আকৃতির একটি আমগাছ ছিল। গাছে শহীদ মিনার ঢেকে যাওয়ার আশঙ্কায় সমালোচনা হলে গাছ কেটে ফেলা হয়।

২০২০ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারকে অক্টোপাস আকৃতির উল্লেখ করে এটি পরিবর্তনের দাবি জানায় একদল শিক্ষার্থী। তবে তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতারা অক্টোপাসের সঙ্গে শহীদ মিনারের তুলনা করা অশোভনীয় বলে মন্তব্য করেন।

সর্বশেষ এবারের একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপনকে কেন্দ্র করে ভাষাশহীদ রফিক স্মৃতি পরিষদের পক্ষ থেকে শহীদ মিনারে ওঠার পথে জুতা খুলে প্রবেশের জন্য একটি সাইনবোর্ড টাঙানো হয়।

এ বিভাগের আরো খবর