বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভাষাসংগ্রামী আশরাফুদ্দীন আহমদকে স্মরণ

  •    
  • ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ২২:৪৫

আজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুকারম হোসেন শুকরানা বলেন, ‘স্যার ভাষা আন্দোলনে রেখেছেন অগ্রণী ভূমিকা। একাত্তরের সময় বাড়ি বাড়ি গিয়ে তরুণ সমাজকে সুসংগঠিত করে মুক্তিযুদ্ধে পাঠিয়েছেন। তার সন্তানরাও মুক্তিযোদ্ধা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আকুল আবেদন, তাকে যেন একুশে পদকে ভূষিত করা হয়।’ 

ভাষাসংগ্রামী ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক আশরাফুদ্দীন আহমদের স্মরণে সভা হয়েছে।

কিশোরগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে রোববার বিকেলে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ) ও বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বাশিস) কিশোরগঞ্জ জেলা শাখা যৌথভাবে এ স্মরণ সভার আয়োজন করে।

বাশিস সভাপতি রাবেয়া আক্তারের সভাপতিত্বে সভাটি সঞ্চালনা করেন বিটিএর সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর ও সহকারী অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম রুবেল।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন আশরাফুদ্দীন আহমদ। ১৯৭৫ সালে কিশোরগঞ্জ সদর আসন থেকে হন সংসদ সদস্য।

জনপ্রতিনিধি হলেও শিক্ষকতা পেশা থেকে তিনি দূরে সরেননি। আজিম উদ্দিন বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পড়িয়েছেন তিনি।

স্মরণ সভায় আশরাফুদ্দীন আহমদের সততা, মহানুভবতা ও তার নেতৃত্বের গুণাবলিসহ নানা বিষয়ে স্মৃতিচারণ করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। আলোচনায় অংশ নেন তার ছাত্ররাও, যারা আজ শিক্ষকতাসহ নানা পেশায় আছেন।

তাদেরই একজন বাশিসের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এ কে এম ফজলুল হক। তিনি বলেন, ‘আশরাফুদ্দীন স্যার ছিলেন ন্যায়, নীতি ও আদর্শের প্রতীক। স্যার ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলেন। এমনকি খুব কম বয়সেই তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সান্নিধ্য লাভ করেন।

‘স্যারকে দেখেই আমার শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন জেগেছিল। তিনি একাধারে ছিলেন একজন শিক্ষক, লেখক, কিশোরগঞ্জ মহকুমা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক। তার পরও কোনো ধরনের অহংকার বা ক্ষমতার দাপট স্যারের মধ্যে ছিল না।’

জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাচ্চু বলেন, ‘আমরা শুনেছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুবই ঘনিষ্ঠজন ছিলেন জনাব আশরাফুদ্দীন আহমদ স্যার। জাতির পিতা তাকে মাস্টারসাব বলেই ডাকতেন। অন্য কাউকে যেকোনো বিষয়ে সততার উদাহরণ দিলে তার কথা বলতেন। আশরাফুদ্দীন স্যারের সন্তানরাও তার আদর্শকে লালন করেই সততার সঙ্গে মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন।’

হাসমত উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আজকে আমরা যার স্মরণ সভায় উপস্থিত হয়েছি তার কথা এই অল্প সময়ে শেষ করা যাবে না। আজকে আমি যে স্কুলটির প্রধান শিক্ষক, সেই স্কুলটিকেও প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে তার ভূমিকা ছিল সর্বোচ্চ।’

তিনি বলেন, ‘স্যার ছিলেন আমাদের শিক্ষক সমাজের আইকন। তিনি আমাদের শিক্ষকদের জন্য শহরের আখড়াবাজার এলাকায় পাঁচ শতাংশ জায়গাও রেখে গেছেন।’

১৯৯৯ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মারা যান গুণী মানুষ আশরাফুদ্দীন আহমদ। তার ২৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই সভার আয়োজন করা হয়।

আজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুকারম হোসেন শুকরানা বলেন, ‘স্যার ভাষা আন্দোলনে রেখেছেন অগ্রণী ভূমিকা। একাত্তরের সময় বাড়ি বাড়ি গিয়ে তরুণ সমাজকে সুসংগঠিত করে মুক্তিযুদ্ধে পাঠিয়েছেন। তার সন্তানরাও মুক্তিযোদ্ধা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আকুল আবেদন, তাকে যেন একুশে পদকে ভূষিত করা হয়।’

জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাচ্চু বলেন, ‘আমরা শুনেছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুবই ঘনিষ্ঠজন ছিলেন আশরাফুদ্দীন আহমদ স্যার। জাতির পিতা তাকে মাস্টারসাব বলেই ডাকতেন। অন্য কাউকে যেকোনো বিষয়ে সততার উদাহরণ দিলে তার কথা বলতেন। আশরাফুদ্দীন স্যারের সন্তানরাও তার আদর্শকে লালন করেই সততার সঙ্গে মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন।’

কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মামুন আল মাসুদ খান বলেন, ‘স্বাধীনতার পর স্যার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। কিন্তু সততা ও আদর্শ থেকে কখনও বিচ্যুত হননি। শিক্ষকতার মহান পেশাকে সমুন্নত রেখেছেন।’

ভাষাসংগ্রামী মিছির উদ্দীন আহমেদের ছেলে সাইফউদ্দীন আহমেদ লেনিন বলেন, ‘কিশোরগঞ্জের অন্যতম ভাষাসংগ্রামী আশরাফুদ্দীন আহমদ ছিলেন নির্লোভ, স্পষ্টবাদী, সৎ ও আদর্শবান একজন শিক্ষক। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে তিনি মায়ের ভাষা বাংলাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আন্দোলন করেছেন, জেলে গিয়েছেন। হাসিমুখে নিজের ছেলেকে পাঠিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধে।’

সভায় আশরাফুদ্দীন আহমদের ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা সাব্বির আহমদ মানিক, তেজগাঁও মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, অবসর সুবিধা বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক নাজিম উদ্দিন তালুকদার, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিলকিস বেগমসহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন।

এ বিভাগের আরো খবর