ভাষার জন্য যারা রাজপথে জীবন দিয়েছিলেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে গোটা জাতি। অমর একুশের প্রথম প্রহরে শনিবার মধ্যরাত থেকে শহীদ মিনার ভরে উঠবে ফুলে ফুলে।
এ উপলক্ষে সারা দেশের মতো প্রস্তুত ঠাকুরগাঁও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারও। শ্রদ্ধা জানাতে যে পথ দিয়ে প্রভাতফেরি করে শহীদ মিনারে যাওয়া হবে, সে পথজুড়ে আঁকা হয়েছে আল্পনা।
জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের পূর্ব পথে অমর একুশের এ আল্পনা এঁকেছেন শহরের শিক্ষার্থী, শিশু, কিশোরসহ অন্যান্য পেশার মানুষজন।
রাফসান মুস্তাফিজ রেওন ও রেদওয়ান মুস্তাফিজ রিদ্দি দুই ভাই। রোববার সকালে শহরের ঘোষপাড়া থেকে এসে বাবার সঙ্গে রং তুলি হাতে আল্পনা আঁকায় ব্যস্ত তারাও।
নিউজবাংলাকে রাফসান বলেন, ‘আল্পনা আঁকা শিখিনি। কিন্তু ভাষাশহীদদের জন্য বাবার আঁকা আল্পনাতে লাল রং লাগাতে ভালো লাগছে।’
বাবা মোস্তাফিজুর রহমান রিপন বলেন, ‘একুশ মানে মাথা নত না করা। তাই আমি আমার সন্তানদের মেধা ও মানসিক বিকাশের জন্য এখানে নিয়ে এসেছি। যেন ওদের মাঝে একুশের চেতনা জাগ্রত থাকে।’
পুরো পরিবার নিয়ে আল্পনা আঁকতে এসেছেন আশ্রমপাড়া মহল্লার গীতা রানী। বলেন, ‘শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের যেমন করে শ্রদ্ধা জানিয়ে থাকি, তেমনি আল্পনা সেই শ্রদ্ধারই একটা অংশ। আমি মনে করি এমন উদ্যোগ সফল করতে আমাদের প্রজন্ম সহায়তা করবে। তাই আমি আমার শিশুসন্তানসহ পুরো পরিবার নিয়ে এখানে আল্পনা করতে এসেছি।’
চারুকলার শিক্ষক করিমুল ইসলাম জাদু বলেন, ‘নিজের ভাষার যারা জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাদের শ্রদ্ধা জানাতে এই সৃজনশীল উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আমি মনে করি এমন উদ্যোগে ভাষা আন্দোলনের গৌরবময় ইতিহাস প্রজন্মের কাছে যুগ যুগ বেঁচে থাকবে।’
জেলা প্রশাসক মাহাবুবুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘একুশের আল্পনা আমাদের একটি ঐতিহ্য। তাই আমরা এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আমরা চাই এ আল্পনা এখনকার প্রজন্ম নিজেরাই করুক এবং অমর একুশের যে চেতনা সেটি জাগ্রত হোক।’