সীমান্তঘেঁষা শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড়ে আরও একটি বন্যহাতির মৃতদেহ পাওয়া গেছে।
গজনী বিটের আঠারো ঝোড়া নামক স্থান থেকেন শনিবার সকালে মৃতদেহটি উদ্ধার করেছে বনবিভাগ।
বনবিভাগের গজনী বিট অফিসার মুকরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘ধারণা করা হচ্ছে, ২/১ দিন আগে এটির মৃত্যু হয়েছে। হাতিটির বয়স আনুমানিক আট বছর।’
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী ভূমি কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘কি কারণে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে এখনো বলতে পারছি না। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর জানা যাবে।’
এটির স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা বালিজুরি রেঞ্জ কর্মকর্তা রবিউল ইসলামের। তিনি বলেন, ‘আমাদের ধারণা হাতিটির স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। কারণ, আশপাশে কোনো ফসল বা বিদ্যুতের লাইন নাই।’
তবে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ সাদিয়া আফরিনের ধারণা ভিন্ন। তিনি বলেছেন, ‘হাতিটি খাদ্যের বিষক্রিয়ায় মারা যেতে পারে। ময়নাতদন্তের পরীক্ষা করে আসল কারণ জানা যাবে।’
এদিকে একের পর এক হাতির মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রকৃতি ও পরিবেশবাদী সংগঠন ‘সবুজ আন্দোলনের’ কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মেরাজ উদ্দিন।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘শেরপুরের গারো পাহাড়ে একের পর এক হাতির মৃত্যু ও হত্যার ঘটনা ঘটেই চলেছে। এসব হাতিকে নানা উপায়ে হত্যা করা হলেও এর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।
‘শুধুমাত্র একটি হাতি হত্যার ব্যাপারে মামলা হলেও বাকিগুলোর বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। যে কারণে গারো পাহাড়ে হাতি হত্যা থামছেই না। গত তিন মাসে ৪টি হাতির মৃত্যুর ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন।’
এ সময় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে হাতি মৃত্যুর ঘটনার মূল কারণ উদঘাটন ও এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এর আগে গত ৯ নভেম্বর শ্রীবরদী উপজেলার গারো পাহাড়ে বিদ্যুৎ লাইনের সঙ্গে সংযুক্ত জিআই তারে জড়িয়ে একটি হাতির মৃত্যু হয়। প্রাথমিকভাবে বিদ্যুতায়িত হয়ে হাতির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হলে রেঞ্জ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম এ ঘটনায় প্রথমে শ্রীবরদী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে ১১ নভেম্বর চারজনের নামে মামলা করেন।
একই দিন বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের টেরিডেবার হাইতারাগুনা থেকে গুলিবিদ্ধ একটি হাতির মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
তার আগে ৬ নভেম্বর সাতকানিয়া উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের হযরত আজগর আলী শাহ মাজারের পশ্চিম পাশে মইত্তাতলী বিলের ধানক্ষেতে একটি মৃত হাতি পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা।
আর ১২ নভেম্বর চট্টগ্রামের বাঁশখালীর চাম্বল ইউনিয়নের পূর্ব চাম্বল ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ধানক্ষেতের পাশে পাওয়া যায় আরেকটি মৃত হাতি।