খুলনার তেরখাদায় পুকুর থেকে আড়াই মাস বয়সী দুই যমজ বোনের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় করা মামলায় মাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
উপজেলার ছাগলাদাহ ইউনিয়নের কুশলা গ্রামে শুক্রবার দুপুরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মা কানিজ ফাতেমা কনাসহ তিন জনকে আটক করে পুলিশ।
এর আগে প্রায় আড়াই মাস বয়সী যমজ বোন মনি ও মুক্তাকে হত্যা করে মরদেহ পুকুরে ফেলে দেয়ার অভিযোগে রাতে তেরখাদা থানায় মামলা করেন শিশু দুটির বাবা মাসুম বিল্লাহ। জিজ্ঞাসাবাদের পর দুই জনকে ছেড়ে দিয়ে মামলায় কনাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
নিউজবাংলাকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তেরখাদা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. এনামুল হক এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘শুক্রবার সকালে ওই গ্রামের একটি পুকুর থেকে দুই শিশু মনি ও মুক্তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কনাসহ তিন জনকে আটক করা হয়। শিশু দুটিকে হত্যা করে পুকুরে ফেলে দেয়া হয়েছে অভিযোগ করে রাতে বাবা মাসুম বিল্লাহ তেরখাদা থানায় মামলা করেন।
‘জিজ্ঞাসাবাদে সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় অপর দুই জনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আর মা কনাকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।’
এসআই বলেন, ‘কনাকে আদালতে পাঠানো হবে।’
শুক্রবার রাতে মায়ের পাশ থেকে নিখোঁজের পর সকালে একটি পুকুর থেকে মনি ও মুক্তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
তাদের বাড়ি বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার গাংনী গ্রামে। তেরখাদার কুশলা গ্রামে বাবার বাড়িতে দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে থাকতেন মা ফাতেমা।
কুশলা গ্রামের লোকজন জানান, খায়ের শেখের মেয়ে কনাকে বিয়ে করেন বাগেরহাটের মোল্লাহাটের গাংনীর মাতারচর গ্রামের মাসুম বিল্লাহ্। মাসুম চাঁদপুরে একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন। ঘটনার রাতে তিনি গাংনীতে নিজ বাড়িতে ছিলেন।
বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে দুই শিশুকে খাওয়ানোর পর ঘুমিয়ে পড়েন কনা। ঘণ্টাখানেক পর তিনি জেগে দেখেন শিশুরা নেই। এ সময় তার চিৎকারে ঘুম ভাঙে বাড়ির অন্যদের। অনেক খোঁজাখুঁজির পর সকালে দুই শিশুর মরদেহ পুকুরে ভাসতে দেখে তারা পুলিশে খবর দেন।
তেরখাদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহুরুল আলম জানান, বিয়ের পর থেকে কনা ও মাসুম বিল্লাহর বনিবনা ছিল না। একপর্যায়ে কনা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে তাকে তেরখাদায় বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন মাসুম। জন্মের পর থেকে মনি ও মুক্তা নানার বাড়িতেই ছিল।
পরিবারের বরাতে ওসি জানান, শিশু দুটি খুব কান্নাকাটি করত।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার রাতে দুই শিশুকে খাইয়ে ঘুমিয়ে পড়েন কনা। এ সময় তার ঘরের দরজা খোলা ছিল। রাত আড়াইটার দিকে কণার ঘুম ভাঙলে শিশু দুটিকে না পেয়ে চিৎকার করেন। তাদের কোথাও খুঁজে না পেয়ে পুলিশে খবর দেন স্বজনরা। পুলিশ রাতেই শিশুদের সন্ধানে অভিযান চালায়। সকালে বাড়ির পাশের একটি পুকুরে ভাসমান অবস্থায় তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।