সার্চ কমিটির সুপারিশকৃত ১০ জনের নাম প্রকাশে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সংস্থাটির অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
মন্ত্রী বলেন, ‘সার্চ কমিটি যে ১০ জন সিলেক্ট করবে, আইনবলে এটি তাদের ক্ষমতা। এটি একান্ত সার্চ কমিটির ব্যাপার। সুজনের এরা কারা? এ নিয়ে তারা কথা বলার কে? সুজনের এত দাদাগিরি কেন?’
চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় মন্ত্রী এসব প্রশ্ন তোলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সুজন, এরা কারা? সুজন একটি এনজিও, এই এনজিওর সারা দেশে শাখাও নেই, প্রশাখাও নেই। এরা ব্যক্তিবিশেষ নিয়ে একটা এনজিও। বিভিন্ন সংস্থা থেকে তারা তহবিল সংগ্রহ করে চলে, এমনকি নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকেও তারা একসময় তহবিল নিয়েছিল। এ নিয়ে প্রশ্ন রেখেছেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার। সুজন যেভাবে পরামর্শ দিচ্ছে, আর গণমাধ্যমেও কেন তা ফলাও করে প্রকাশ করা হয়, এ বিষয়ে আমারও প্রশ্ন আছে।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সার্চ কমিটি যে ১০ জন সিলেক্ট করবে, আইনবলে এটি তাদের ক্ষমতা। এটি প্রকাশ করবে কি করবে না, তা একান্ত সার্চ কমিটির ব্যাপার। এ নিয়ে সুজন বলার কে? সুজন কি নির্বাচন করে? নির্বাচনের ক্ষেত্রে সুজন কি এখানে স্টেকহোল্ডার? তা তো নয়। এখানে যারা নির্বাচন করেন তারাই হচ্ছেন স্টেকহোল্ডার। সুজনের এত দাদাগিরি কেন, সেটিই আমার বড় প্রশ্ন।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি তাদের নয়াপল্টন অফিসে ১২ বছর আগে থেকে আমাদের সরকারের বিদায় ঘণ্টা বাজাচ্ছে, আরও কয় বছর বাজাতে হয় সেটা জনগণ ঠিক করবে। তারা বিদায় ঘণ্টা বাজানো সত্ত্বেও জনগণ গত দুই নির্বাচনে আমাদের নির্বাচিত করে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে।’
এ সময় মন্ত্রী বেসরকারি চাকরিজীবী ও ষাটোর্ধ্বদের জন্য পেনশন স্কিম চালুর বিষয় নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘ষাটোর্ধ্বদের জন্য পেনশন স্কিম প্রধানমন্ত্রীর একান্তই নিজস্ব চিন্তার ফসল। বিএনপিসহ কোনো রাজনৈতিক দল কখনও এ দাবি করেনি। রাত ১২টার পর সুশীল সমাজের যারা টেলিভিশনের পর্দা গরম করেন, যারা সময়ে-অসময়ে, কারণে-অকারণে জাতিকে জ্ঞান দেয়ার চেষ্টা করেন, তারাও বলেননি। প্রধানমন্ত্রী এভাবেই দেশকে একটি সামাজিক কল্যাণ রাষ্ট্রে রূপান্তর করতে চান।
‘আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে দেশে অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে। আগামী নির্বাচনেও জনগণ নৌকায় ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দেবে।’
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘যে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে এবং যেভাবে অংশগ্রহণমূলকভাবে এবার নির্বাচন কমিশন গঠন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, তা অভাবনীয়। ৭৫ বছরের গণতন্ত্রের দেশ ভারতসহ কয়েক শ বছরের পুরোনো গণতন্ত্রের দেশেও এভাবে করা হয় না।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী অবশ্যই একটি নির্বাচনকালীন সরকার থাকবে। বর্তমান সরকার গত নির্বাচনে নির্বাচিত হয়েছিল, সেই সরকারই নির্বাচনকালের সরকার হিসেবে সংবিধান অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবে।
‘নির্বাচন কখনও সরকারের অধীনে হয় না, নির্বাচন হয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে। নির্বাচনের সময় কোনো মন্ত্রী, এমনকি প্রধানমন্ত্রীরও একজন কনস্টেবল বদলি করারও ক্ষমতা থাকে না। তখন সরকার শুধু রুটিন কাজ করতে পারে। বিএনপি যে ধোঁয়া তুলছে নির্বাচনকালে সবাইকে নিয়ে একটি সরকার গঠন করার, সংবিধান অনুযায়ী তা করার কোনো সুযোগ নেই।’
সার্কিট হাউসে এ সময় চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।