বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অযথাই মারেন ‘বড় ভাই’

  •    
  • ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০০:২৭

অভিযুক্ত রুকনুজ্জামান রুকন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি হলটির ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মুনেম শাহরিয়ার মুনের অনুসারী। আর মুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী। তার বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক জুনিয়র শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ‘নিয়ম ভঙ্গ করে’ তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলায় শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হতে হয়েছে প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে। স্যার এ এফ রহমান হলের ১০৮ নম্বর কক্ষের ওই শিক্ষার্থীকে গেস্টরুমে ডেকে নিয়ে থাপ্পড় মেরেছেন এক ‘বড় ভাই’।

ভুক্তভোগী মোল্লা তৈয়মুর রহমান শান্তি ও সংঘর্ষ বিভাগের প্রথম শিক্ষার্থী। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতের এ ঘটনায় তিনি বৃহস্পতিবার হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলামের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আবারো নির্যাতিত হওয়ার আশঙ্কায় ঘটনার পরদিনই হল ছেড়ে ভাইয়ের বাসায় চলে যাওয়ায় অভিযোগ দিতে দেরি হয়েছে বলে জানান তিনি।

অভিযুক্ত রুকনুজ্জামান রুকন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি হলটির ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মুনেম শাহরিয়ার মুনের অনুসারী। আর মুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী। তার বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক জুনিয়র শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ রয়েছে।

তৈয়মুর বলেন, ‘গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে আমি হল ক্যান্টিন থেকে খেয়ে বের হওয়ার পর তৃতীয় বর্ষের এক ভাই আমাকে ডাক দেন। আমি তার সঙ্গে হল মাঠে দাঁড়িয়ে কথা বলি। তিনি আমার ব্লাড গ্রুপ জানতে চান এবং রক্ত দিতে পারবো কিনা জিজ্ঞাসা করেন।

‘দ্বিতীয় বর্ষের বড় ভাইয়েরা গেস্টরুমে ডেকে নিয়ে বলে দিয়েছেন, দ্বিতীয় বর্ষের ছাড়া কারও সঙ্গে আমরা কথা বলতে পারব না। হল মাঠেও যেতে পারব না। কিন্তু আমি হল মাঠে দাঁড়িয়ে তৃতীয় বর্ষের এক ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলছি দেখে দ্বিতীয় বর্ষের ভাইয়েরা আমাকে গেস্টরুমে ডাকেন। ১০৮ নম্বর রুমেই আমাদের গেস্টরুম হয়।’

রুকনুজ্জামান রুকন, দ্বিতীয় বর্ষের এই শিক্ষার্থীর ভয়ে গুটিয়ে থাকেন হলের জুনিয়র শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত

নির্যাতনের শিকার এ নবীন শিক্ষার্থী বলেন, ‘গেস্টরুমে বড় ভাইয়েরা আমাকে জিজ্ঞেস করেন কোন ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেছি, কী কথা বলেছি। আমি নাম না বলায় রুকনুজ্জামান ভাই বসা থেকে উঠে এসে আমাকে সজোরে থাপ্পড় মারেন। থাপ্পড়ের আঘাতে কিছুক্ষণ আমি কিছুই শুনতে পাচ্ছিলাম না।’

তৈয়মুর বলেন, ‘থাপ্পড় মারার পর গেস্টরুমে থাকা দ্বিতীয় বর্ষের মোহাম্মদ আলী ভাই আমাকে বাঁচানোর জন্য রুম থেকে বের করে দেন। আমি রুম থেকে বের হয়ে গেলে রুকনুজ্জামান ভাই এসে বলেন- এগুলো অভ্যাস করে নাও। এগুলো নিয়মিত হবে। আর এই ঘটনা কাউকে জানালে তোমার জন্য খারাপ হবে।’

‘শুধু আমাকে না, রুকনুজ্জামান ভাই এর আগে আমার অনেক বন্ধুকেও মেরেছেন। সবশেষ গতকাল রাতে তিনি আমার বন্ধু রিফাত হোসাইনকে গেস্টরুমে এমন জোরে থাপ্পড় মেরেছেন যে তার কান থেকে রক্ত বের হয়েছে। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত রুকনুজ্জামান বলেন, ‘এরকম কিছুই হয়নি। লিখিত অভিযোগের বিষয়ে আমি নিজেও জানি না। আর আমাদের হলে কোনো গেস্টরুম হয় না।’

এদিকে লিখিত অভিযোগ পেয়ে প্রাধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। শনিবারের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবদেন দিতে বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। হলটির আবাসিক শিক্ষক মারুফ সাহ ও সহকারী আবাসিক শিক্ষক ড. মো মুমিত আল রশীদকে নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পর অ্যাকশন হবে।

‘অভিযুক্ত শিক্ষার্থী যে গ্রুপের সঙ্গে জড়িত সেই গ্রুপের নেতাকে ডেকেছি। তাকে বলে দেয়া হয়েছে- তোমার অনুসারী এরকম মাস্তানি করছে। আর তাকেও সতর্ক করে দিয়েছি।’

এ বিভাগের আরো খবর