সিরাজগঞ্জের কামারখন্দের রায়দৌলতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগের আগেই প্রার্থী চূড়ান্ত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রার্থীদের অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, সব নিয়ম মেনেই নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযোগের কাগজপত্র ও একটি অডিও ক্লিপ নিউজবাংলা প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।
সহকারী প্রধান শিক্ষক, নৈশপ্রহরী এবং আয়া পদে নিয়োগ পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে বৃহস্পতিবার বিকেলে। এই তিন পদে তিনজন নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি।
নৈশপ্রহরী পদে আবেদন করা আব্দুল্লাহ নিউজবাংলাকে জানান, তিনি নৈশপ্রহরী পদে আবেদন করে বিদ্যালয়ের সভাপতি জয়নাল আবেদিন ও নিয়োগ কমিটির আহ্বায়ক সানোয়ার খন্দকার সানুকে দেড় লাখ টাকা অগ্রিম দিয়েছেন। পরে অন্য একজনের সঙ্গে আরও বেশি টাকায় দফারফা হওয়ায় তার আবেদনটি বাতিল করা হয়।
অগ্রিম নেয়া টাকা এখনও ফেরত দেয়া হয়নি বলে জানান আব্দুল্লাহ।
মাস্টাররোলে আয়া পদে কর্মরত শাহিদা বেগম জানান, ১৪ বছর এই প্রতিষ্ঠানে তিনি কাজ করেছেন। নিয়োগ হলে তিনিই প্রাধান্য পাবেন, এমন আশ্বাস দিয়ে আসছিলেন প্রধান শিক্ষক। কিন্তু নিয়োগের সময় ম্যানেজিং কমিটির একজনের আত্মীয়কে নিয়োগ দেয়ার জন্য তার বিষয়টি আর বিবেচনায় নেয়া হয়নি। উপরন্তু তার মাস্টাররোল বাতিল করা হয়েছে।
এই প্রতিবেদকের হাতে আসা অডিও ক্লিপে শোনা যায়, নিয়োগ কমিটির আহ্বায়ক সানোয়ার হোসেনসহ তার সঙ্গের লোকজন নিয়োগ দেয়ার কথা বলে এক প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন। অজ্ঞাত কারণে তাকে আবার বাতিলও করা হয়েছে।
অডিওতে আরও শোনা যায়, টাকা ফেরত দেয়ার কথা বলছেন সানোয়ার। তবে কবে দেবেন সে বিষয়টি তিনি বলেননি।
অডিও ক্লিপে তিনি আরও বলেন, পুরো বিষয়টি বিদ্যালয়ের সভাপতি জানেন। তার সঙ্গে কথা বললেই এর সমাধান পাওয়া যাবে।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি জয়নাল আবেদিন ও নিয়োগ কমিটির আহ্বায়ক কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
তবে সভাপতির ছেলে বিদ্যালয়ের শিক্ষক হানিফ জানান, প্রতিটি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বেশ কিছু টাকা খরচ হয়। বিভিন্ন দপ্তর থেকে নিয়োগ দেয়ার জন্য প্রতিনিধি আসেন। তাদের আসা-যাওয়া, খাওয়াসহ কিছু সম্মানী দিতেই হয়। সে টাকা তো বিদ্যালয় ফান্ড থেকে দেয়ার সামর্থ্য থাকে না। তাই প্রার্থীদের কাছ থেকেই অল্প কিছু খরচের টাকা নেয়া হয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সারোয়ার হোসেন জানান, স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ পরীক্ষা হয়েছে। আর নিয়োগসংক্রান্ত টাকা-পয়সার কোনো লেনদেন হয়েছে কি না, তা তিনি জানেন না।
কামারখন্দ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাকমান হোসেন জানান, রায়দৌলতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগের জন্য প্রার্থীরা কারও সঙ্গে লেনদেন করেছেন কি না, তা তিনি জানেন না। এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগও দেয়নি।
অফিস ম্যানেজ করে নিয়োগ পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তারা স্বচ্ছভাবেই নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা করেছেন বলে জানান এই শিক্ষা কর্মকর্তা।