করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকার প্রথম ডোজ নিতে এসএমএসের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। নিবন্ধনের সময়ে উল্লেখিত কেন্দ্রে গেলেই মিলছে টিকা। এ কারণে টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে বেড়েছে ভিড়।
রাজধানীর একাধিক টিকাদান কেন্দ্রে বৃহস্পতিবার এমন চিত্র দেখা গেছে।
কেন্দ্র সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা মেনে টিকাদান চলছে। প্রথম ডোজ টিকা দেয়া হবে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এ সময়ের মধ্যে যারা নিবন্ধন করে এসএমএসের জন্য টিকা নিতে পারেনি, তাদের টিকা দেয়া হবে। পাশাপাশি অন্যদের টিকাদান কার্যক্রমও চলবে।
তারা আরও জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে প্রতিটি কেন্দ্রকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এখন আর এসএমএসের জন্য টিকা নেয়া আটকে থাকবে না।
শ্যামলীর ২৫০ শয্যার টিবি হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, প্রথম, দ্বিতীয় ও বুস্টার ডোজ নিতে এসেছেন পাঁচ শতাধিক মানুষ। এর মধ্যে শিক্ষার্থীরাও রয়েছেন। ওই কেন্দ্রে প্রথম ডোজ নিতে আসা ব্যক্তিদের ভিড় অনেক বেশি।
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা পেয়ে এসএমএস ছাড়া টিকা দেয়া হচ্ছে। এই কার্যক্রম চলবে আরও ৯ দিন। এরপর ২৬ তারিখ যারা টিকার জন্য নিবন্ধন করেনি, তাদেরও টিকা দেয়া হবে।
‘ওই দিন এক কোটি মানুষকে টিকা দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) এসএমএস ছাড়া টিকার প্রথম ডোজ দেয়া শুরু হয় সকাল ৯টার দিকে। হাসপাতালটিতে ২০০ জনের বেশি মানুষ এসএমএস না পেয়েই টিকা নিয়েছেন।
টিকাগ্রহীতাকে টিকাদান পরবর্তী কক্ষ বা পোস্ট ভ্যাকসিনেশন রুমে নেয়া হয়। সেখানে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত টিকাগ্রহীতাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়।
কী বলছেন টিকাগ্রহীতারা
বিএসএমএমইউতে টিকা নেয়া বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আলী ইমাম বলেন, ‘দুই মাসে আগে টিকা নেয়ার জন্য নিবন্ধন করেছিলাম, তবে এসএমএস জটিলতায় টিকা নিতে পারিনি।
‘গতকাল (বুধবার) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা পেয়ে টিকা নিতে চলে আসছি। টিকা নেয়ার সারিতে দাড়াঁনোর পর থেকেই নিজের মধ্যে উত্তেজনা কাজ করছিল। টিকা পেয়ে অনেক আনন্দ লাগছে।’
একই হাসপাতালে টিকা নেয়া মধ্যবয়সী নারী আসিয়া বেগম বলেন, ‘একটি দোকান থেকে করোনার টিকা নেয়ার জন্য নিবন্ধন করছিলাম, তবে এসএমএস না আসায় টিকা নিতে পারি নাই।
‘আজ টিকা নিতে এসএমএসের দরকার পড়ে নাই। লাইনে দাঁড়ায়া টিকা নিছি।’
টিকাকেন্দ্রের সমন্বয়ক চিকিৎসক দাউদ আলী বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যে নির্দেশনা দিয়েছে, সেই নির্দেশনা অনুযায়ী সকাল থেকে টিকাদান চলছে। এখন এসএমএসের জন্য টিকা নেয়া আটকাবে না, অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ টিকাপ্রত্যাশীদের ভিড় একটু বেশি।
দেশে করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষা নিশ্চিতে গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি গণটিকাদান শুরু হয়। দেশব্যাপী সুষ্ঠুভাবে করোনার টিকা বিতরণ ও প্রয়োগের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর একটি জাতীয় পরিকল্পনা করেছে।
সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী, দেশের ১২ কোটি মানুষকে টিকা দেয়া হবে। এরই মধ্যে ১০ কোটির বেশি মানুষ টিকার আওতায় চলে এসেছে। আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাকি জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় আনা হবে।
২৬ ফেব্রুয়ারির পর টিকার প্রথম ডোজ দেয়া বন্ধ হয়ে যাবে। ওই দিন বিশেষ টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়নে কেন্দ্রীয়ভাবে ও জেলায় জেলায় স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।