পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন হল দক্ষিণ কলকাতার কেওড়াতলা মহাশ্মশানে। মরদেহে সর্বজনের শ্রদ্ধা জানানো শেষে এই কিংবদন্তিকে শেষ বিদায় জানিয়েছে কলকাতা।
৯০ বছরের প্রবীণ সঙ্গীত শিল্পী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। রাতে তার মরদেহ পিস ওয়ার্ল্ডে রাখা হয়। বুধবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বাংলা সংগীতের স্বর্ণযুগের প্রবাদপ্রতিম এই শিল্পী দেহ রাখা হয় রবীন্দ্র সদনে। সেখানে সমাজের সব স্তরের মানুষ সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের প্রতি তাদের ভালোবাসা, শ্রদ্ধা জানান।
সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার উত্তরবঙ্গ সফর কাটছাঁট করে বুধবার সরাসরি রবীন্দ্র সদনে আসেন। সেখানে গীতশ্রীকে উত্তরীয় পরিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান তিনি। সেখানে তখন উপস্থিত ছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের কন্যা সৌমি মুখোপাধ্যায়।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মন্ত্রিসভার ইন্দ্রনীল সেন, অরূপ বিশ্বাস, বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু ও অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তি রবীন্দ্র সদনে গিয়ে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা জানান।
বিকাল ৫টার কিছু আগে রবীন্দ্র সদন থেকে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মরদেহ শববাহী গাড়িতে তুলে তার ভক্তের দল রওনা দেন কেওড়াতলা মহাশ্মশানের উদ্দেশে। শোক মিছিলে পা মেলান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও। এ সময় রাস্তার দু’ধারে দাঁড়িয়ে থাকেন অগণিত ভক্ত। মাইকে একটানা বেজে চলে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের গাওয়া জনপ্রিয় সব গান।
কালীঘাট, সদানন্দ রোড, হরিশ মুখার্জি রোড হয়ে কেওড়াতলা মহাশ্মশানে পৌঁছে গীতশ্রীর মরদেহবাহী গাড়ি। এরপর পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গান স্যালুট আর চোখের জলে বিদায় জানানো হয় সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে।
শেষকৃত্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বেদনাহত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সেখানে বসে থাকতে দেখা যায়। মাইকে তখন বেজে চলে- ‘তুমি না হয় রহিতে কাছে, কিছুক্ষণ আরও...।’