ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ট্রাকচাপায় শিশু নিহতের ঘটনার দুইদিন পর হত্যা মামলা হয়েছে। এরপর বাড়িতে রেখে দেয়া মরদেহ দাফন করেছে পরিবার।
নিহতের বাবা মঙ্গলবার রাতে নাসিরনগর অভিযোগ দিলেও তা মামলা হিসেবে রেকর্ড হয়েছে বুধবার সকালে।
হত্যার অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার বিকেলে সন্তানের মরদেহ নিয়ে আওয়াল মিয়া সড়ক অবরোধ করলে পুলিশ ১ ঘণ্টার মধ্যে মামলা নেয়ার আশ্বাস দেয়। মরদেহ বাড়ি পাঠিয়ে রাতেই আওয়াল থানায় গিয়ে অভিযোগ জমা দেন।
নাসিরনগর থানার ওসি হাবিবুল্লাহ সরকার জানান, অভিযোগের সব দিক বিবেচনা করে মামলা রেকর্ডে সময় লেগেছে। আসামি করা হয়েছে স্থানীয় ইটভাটার মালিক কাপ্তান মিয়াসহ ৫ জনকে। তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সড়ক অবরোধকালে আওয়াল নিউজবাংলাকে জানান, হরিপুর সুন্নিয়া আলিয়া মাদরাসার প্রথম শ্রেণিতে পড়ত তার ৮ বছরের ছেলে রাসেল মিয়া। হরিপুর সড়কের পাশেই তাদের বাড়ি।
তিনি জানান, সোমবার দুপুরে বাড়ির পাশে বন্ধুদের নিয়ে খেলছিল রাসেল। সে সময় ইটভাটার মাটি আনা-নেয়ার কাজে নিয়োজিত একটি ট্রাক রাসেলকে চাপা দেয়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহ তাদের হস্তান্তর করেন। তবে মরদেহ তারা দাফন না করে বাড়িতেই রাখেন।
মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে মরদেহ নিয়ে হরিপুর-হবিগঞ্জ সড়কের মাধবপুর এলাকায় অবস্থান নেন আউয়াল। তিনি অভিযোগ করেন, ইটভাটার মালিক কাপ্তান মিয়ার নির্দেশেই ট্রাক রাসেলকে চাপা দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ইটভাটার কাজে ট্রাক চলাচল করায় ওই সড়ক নষ্ট হচ্ছিল। এই জন্য কাপ্তান মিয়াকে আমি বাধা দেই। পরে কাপ্তান মিয়া আমাকে হুমকি দেয়। ট্রাকের সামনে যা পড়বে সব মাটির সঙ্গে পিষে দিতে তার লোকজনকে বলে। সোমবার দুপুরে ট্রাকচাপায় আমার ছেলেকে ওরা মেরে ফেলেছে।’
‘রাতে মামলা করতে নাসিরনগর থানায় যাই। সেখানে আমার লেখা মামলা না নিয়ে খারাপ ব্যবহার করে তাড়িয়ে দেয়া হয় এই বলে যে উকিল দিয়ে লেখানো মামলা তারা নেবে না। থানায় মামলা লিখলে নেবে। আমার ছেলে হত্যা বিচার চাই। মামলা না হলে ছেলের দেহ কবর দিব না।’
সরাইল সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জানান, রাসেলের বাবাকে আশ্বাস দেয়া হয়েছে, ১ ঘণ্টার মধ্যে মামলা নেয়া হবে। পরে তারা সন্ধ্যা ৬টায় সড়ক ছেড়ে লাশ নিয়ে বাড়ি ফিরে যান।