বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সারে ভর্তুকি কমছে না, দামও বাড়ছে না

  •    
  • ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ২১:২৮

অর্থমন্ত্রী বলেন, `সারের সাবসিডি কমানোর কোনো প্রস্তাবনা অর্থ মন্ত্রণালয়ে আসেনি। ভয়ের কোনো কারণ নেই। কী পরিমাণ সাবসিডি লাগবে, আমি জানি না। দাম বাড়ানো-কমানোর কোনো প্রস্তাব আসেনি।'

বিশ্ববাজারে দাম অনেক বেড়ে যাওয়ায় সারের ভর্তুকি রাখা নিয়ে কৃষিমন্ত্রী উৎকণ্ঠিত হলেও ‘ভর্তুকি কমছে না, দামও বাড়ছে না’ বলে আশ্বস্ত করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বুধবার সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠক শেষে এক সাংবাদিকের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সারের দাম বাড়ানোর আলোচনাও হয়নি, কোনো প্রস্তাবও অর্থ মন্ত্রণালয়ে আসেনি।’

গত সোমবার কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেছিলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম চার গুণ বেড়ে যাওয়ায় চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে সারে ভর্তুকি দিতে ২৮ হাজার কোটি টাকা খরচ করতে হবে, যা গত অর্থবছরে ছিল ৭ হাজার ৭১৭ কোটি টাকা।

এবারের বাজেটে কৃষি ভর্তুকিতে বরাদ্দ ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, ফলে আরও প্রায় ১৯ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত প্রয়োজন।

ফলে বিশাল অঙ্কের ভর্তুকি অব্যাহত রাখা কঠিন হবে উল্লেখ করে এ বিষয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তিনি।

এ নিয়ে প্রশ্ন করলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সারের দাম বাড়ানোর জন্য উনি (কৃষিমন্ত্রী) যদি ইঙ্গিত দিয়ে থাকেন, তা আমার জানা নেই। আপনারা কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করুন।‘

বিশাল ভর্তুকি প্রসঙ্গে তিনি বলেন,`সারের সাবসিডি কমানোর কোনো প্রস্তাবনা আমাদের কাছে আসেনি। ভয়ের কোনো কারণ নেই। কী পরিমাণ সাবসিডি লাগবে, আমি জানি না। দাম বাড়ানো-কমানোর কোনো প্রস্তাব আসেনি।‘

এ প্রসঙ্গে মুস্তফা কামাল আরও বলেন,`অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে আমরা জনগণের অর্থ দেখাশোনা করি। সবাই যদি সাশ্রয়ী হওয়ার জন্য তৎপর থাকেন সেটা ভালো। অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা যেন না করা হয়, সেটা অর্থ মন্ত্রণালয়কে সবাই বলে থাকেন ‘

‘দিন শেষে তার মন্ত্রণালয়কে অর্থের জোগান দিতে হয়। তাই ব্যয় সাশ্রয় বা যৌক্তিকীকরণে একটা চাপ তো থাকেই।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, 'অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব জনগণের অর্থ দেখাশোনা করা, ম্যানেজমেন্ট করা। আমরা তৎপর থাকি সাশ্রয় করার জন্য, অপ্রয়োজনে যাতে খরচ না হয় সে জন্য। এ জন্য একটা প্রেসারও মন্ত্রণালয়গুলোর ওপর থাকে। কারণ কোথাও ঘাটতি হলে তার ম্যানেজমেন্ট আমাদেরই করতে হয়।'

ভর্তুকি কমানোর কৌশল জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এ মুহূর্তে কী পরিমাণ লাগবে জানি না। প্রস্তাব আসার পর জেনে জানাতে পারব। সে জন্য অপেক্ষা করতে হবে।’

কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বব্যাপী সারের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় জাহাজ ভাড়া বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে কেজিপ্রতি আমদানি ব্যয় ছিল—ইউরিয়া ৩২ টাকা, টিএসপি ৩৩ টাকা, এমওপি ২৩ টাকা ও ডিএপি ৩৭ টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে এ দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৯৬ টাকা, ৭০ টাকা, ৫৪ টাকা ও ৯৩ টাকা।

সরকার বর্তমানে প্রতি কেজি সারে সার্বিক খরচের বিপরীতে যে হারে ভর্তুকি দিচ্ছে—ইউরিয়ায় ৮২ টাকা, টিএসপিতে ৫০ টাকা, এমওপিতে ৪১ টাকা এবং ডিএপিতে ৭৯ টাকা। চলতি অর্থবছরের বাজেটে পুরো ভর্তুকি খাতে ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও এবার বাড়তি অর্থ লাগবে ১৯ হাজার কোটি টাকা। গত ২০২০-২১ অর্থবছরে ভর্তুকিতে ৭ হাজার ৭১৭ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছিল।

দেশীয় ঠিকাদারদের সুযোগ বাড়াতে উদ্যোগ

বৈঠকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের দুটি, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) একটি, স্থানীয় সরকার বিভাগের একটি এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের একটি প্রস্তাব বিবেচনায় নেয়া হয়েছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।

আইএমইডির প্রস্তাব প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশিদের কাজ দেয়া থেকে বেরিয়ে আসতে চাই। আমাদের ক্যাপাসিটি বেড়েছে। এখন আমরা সব কাজে, সব টেন্ডারে বিদেশিদের ইনভাইট করার চেষ্টা করি বা তাদের কাজ দেয়ার চেষ্টা করি। আস্তে আস্তে আমরা সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে চাই ‘

তিনি বলেন, ‘যেসব কাজ হাইলি টেকনিক্যাল, যেগুলো আমাদের লোকাল কন্ট্রাকটররা করতে পারেননি, লোকাল বিজনেস হাউসগুলো প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি সেসব কাজ করার জন্য আমরা বিদেশিদের অনুমোদন দেব।

‘আমরা সব সময় লোকাল বিজনেসকে এনকারেজ করি। কারণ আমরা চাই লোকাল বিজনেস উন্নতি করুক। সে জন্য বিদেশি যারা কাজ পাবে তারা আমাদের লোকাল কোনো বিজনেস হাউসকে তাদের সঙ্গে জয়েন্ট ভেঞ্চার পার্টনার হিসেবে নিয়ে কাজটি করার জন্য উৎসাহ দিই। সেভাবে যদি কাজটি করা হয় তাহলে আমাদের লোকাল বিজনেস হাউসগুলো সুযোগ-সুবিধা পাবে।’

‘আগামী দিনগুলোতে নিজেরাই ডিটেইলস দেখে কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত হবে। একটা সময় আসবে যখন তারা নিজেরাই এককভাবে কাজটি করতে পারবে। আমরা নিজস্ব ক্যাপাসিটি বিল্ডআপ করার জন্য এ প্রস্তাবনা এনেছি। বৈঠকে এগুলো নিয়েই আলোচনা হয়েছে এটা কীভাবে করা যায়।’

এ বিভাগের আরো খবর