তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বদলে নির্বাচনকালীন ৩ বছর মেয়াদি সরকার চান নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। তবে সেই সরকারের রূপরেখা স্পষ্টভাবে না জানালেও তার করণীয়গুলো উল্লেখ করেন তিনি।
রাজধানীর ধানমন্ডিতে বুধবার নগর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে এক স্মরণ সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানীর ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকীতে স্মরণ সভায় তিনি এমন দাবি করেন। ওই সভার আয়োজন করে জেনারেল ওসমানী ফাউন্ডেশন।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে পত্রিকার খবরের প্রসঙ্গ তুলে একসময়ে আওয়ামী লীগে থাকা এই নেতা বলেন, ‘সরকার যে অর্থনীতির ডঙ্কা বাজায়, উন্নয়নের মহাসড়কে দেশ-এসব মিথ্যা কথা। এরা এমন চাপাবাজ, রাতকে দিন আর দিনকে রাত করে।’
আওয়ামী লীগ সরকারকে যেতে হবে উল্লেখ করে মান্না বলেন, ‘যেতেই হবে। এখন পরিস্থিতি এমন তৈরি হয়েছে, নিজের ঘরের মধ্যেই প্রায় বন্দি হয়ে গেছে।’
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমার সোজা কথা, গতবার আমরা এই ব্যাপারে ভালোভাবে বলতে পারিনি। এই সরকারকে যেতে তো হবেই, আপনারা যখন যাবেন, সেখানে একটা অন্তর্বর্তী সরকার হতে হবে।’
বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির বাইরে গিয়ে তিনি বলেন, ‘এক করোনার মধ্যে সাড়ে ৩ কোটি মানুষ দরিদ্র হয়েছে। বাংলাদেশে ৮ কোটি লোক দরিদ্র। ৪ কোটি লোক বেকার। আমরা মনে করি দেশটা বদলাতে হবে। এই ৪ কোটি লোকের চাকরি দিতে হবে। ৮ কোটি লোকের দারিদ্র্য দূর করতে হবে।
‘এই সরকার চলে যাবে ৩ মাসের জন্য একটা কেয়ারটেকার গভর্নমেন্ট আনবে, কিন্তু কিছুই বদলাবে না। যারা এই প্রশাসনে বসে আছেন, তারা তাদের জায়গায় থেকে যদি নির্বাচন দেন, সেই নির্বাচনের ফলাফল কী হবে?’
নির্বাচনকালীন ৩ বছর মেয়াদি সরকারের প্রসঙ্গে মান্না বলেন, ‘যদি আপনি বলেন, কেয়ারকেটার সরকার নিজের কেয়ারই করতে পারবে না, মানুষের কেয়ার কী করবে? ৩ মাস তো মাত্র সময়। এমন সরকার হবে, যারা এই পরিস্থিতিটা বদলে দিতে পারে।’
গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘কেয়ারটেকার সরকারের সংবিধানে সময় ছিল ৩ মাস, ২ বছর লেগেছে যেতে। আর তখন যত জঞ্জাল ছিল তার চেয়ে অনেক এখন। সেটা দূর করতে কত সময় লাগতে পারে?
মান্না বলেন, ‘আমি স্পষ্ট বলছি, কোনো নিরপেক্ষ সরকারে আমি বিশ্বাস করি না। যদি কেয়ারটেকারকে বলেন নির্বাচন করাই তার দায়িত্ব তাহলে এই যে মানুষগুলো দরিদ্র তাদের চিকিৎসা করাবে কে। যে সরকার হবে, তাকে সেই ক্ষমতা দিতে হবে। সে সরকার যদি বলে, অতীতে ১২ বছরে কী হয়েছে আমি এ ব্যাপারে অন্ধ থাকতে চাই, তাহলে চলবে না।’