বগুড়ায় পৌর পার্কে যুবলীগ নেতা মিরাজ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু ও রক্তমাখা জ্যাকেট উদ্ধার করেছে পুলিশ।
জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বুধবার দুপুর ১২টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে সদর ও সোনাতলা উপজেলা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গ্রেপ্তার হওয়া তিনজন হলেন মিরাজের সাবেক প্রেমিকার কথিত প্রেমিক ১৬ বছরের এক কিশোর। তার সহযোগী সোনাতলা উপজেলার মুন্নু মিয়ার ছেলে ১৮ বছরের তারেক রহমান এবং বগুড়া শহরের রহমাননগর এলাকার আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে ২৮ বছরের মোহাম্মাদ মিঠুন।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মূল অভিযুক্ত ও গ্রেপ্তার হওয়া কথিত প্রেমিক হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
তিনি আরও জানান, নিহত মিরাজের সঙ্গে বগুড়া শহরের বাদুরতলা এলাকার এক মেয়ের প্রায় এক বছরের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু কিছুদিন আগেই ওই মেয়ের সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয় অভিযুক্ত কিশোরের।
পরে মিরাজের পাশাপাশি ওই কিশোরের সঙ্গেও মেসেঞ্জারে মেসেজ আদান-প্রদানসহ কথাবার্তা চালাতে থাকেন মেয়েটি।
এদিকে মেয়েটির ফেসুবক আইডির পাসওয়ার্ড ছিল নিহত মিরাজের কাছে। তিনি মেয়েটির ফেসবুকে ঢুকে দেখতে পান তার প্রেমিকা ওই কিশোরের সঙ্গেও সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন।
এ বিষয়ে মিরাজ কৈফিয়ত চাইলে মেয়েটি জানান, ওই কিশোর তাকে বিভিন্নভাবে বিরক্ত করে ও প্রেমের জন্য চাপ দিচ্ছে। এর পর থেকেই মিরাজ এবং ওই কিশোরের মধ্যে ফেসবুক ও মুঠোফোনে বাদানুবাদ শুরু হয়। তারা একে অন্যকে হুমকি-ধমকি দিতে থাকেন।
একপর্যায়ে ঘটনাটি মীমাংসার জন্য ওই কিশোর প্রেমিককে বগুড়া শহর পৌর পার্কে ডাকেন মিরাজ। মঙ্গলবার বিকেলে সেই কিশোর তার দুই সহযোগী তারেক ও মিঠুনকে নিয়ে পার্কে আসেন। তবে ঘটনাস্থলে মেয়েটির থাকার কথা থাকলেও তিনি অনুপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘একপর্যায়ে ভিকটিম মিরাজ ও তার বন্ধু নাজমুলের সঙ্গে অভিযুক্ত কিশোর ও তার দুই সহযোগীর কথা-কাটাকাটি, ধাকাধাক্কি ও কিলঘুষি শুরু হয়। এ সময় ওই কিশোরের সহযোগী মিঠুন তার কাছে থাকা বার্মিজ চাকু দিয়ে মিরাজ ও নাজমুলকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান।
‘পরে স্থানীয় লোকজন মিরাজ ও নাজমুলকে গুরুতর আহত অবস্থায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মিরাজকে মৃত ঘোষণা করেন এবং নাজমুলকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।’
পুলিশ সুপার জানান, এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়াদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এ ছাড়া হত্যাকাণ্ডে কথিত প্রেমিকারও কোনো সম্পৃক্ততা আছে কি না খতিয়ে দেখা হবে।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বগুড়া সদর থানায় নিহত মিরাজের বড় ভাই আতাউর রহমান বাদী হয়ে মামলা করেছেন।