করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউয়ে পরিস্থিতির ক্রমেই উন্নতির মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় এবার এক মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম রোগী পাওয়া গেল। গত ২০ জানুয়ারি তৃতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়ার পর এত কম রোগী পাওয়া যায়নি।
রোগীর পাশাপাশি পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হারও একই সময়ের মধ্যে সবচেয়ে কম পাওয়া গেছে।
মৃত্যুর সংখ্যাও খানিকটা কমে এসেছে। গত তিন সপ্তাহের মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে সবচেয়ে কম।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায় মঙ্গলবার সকাল থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত সারাদেশে নতুন রোগী পাওয়া গেছে ৩ হাজার ৯২৯ জন।
রোগীর এই পরিমাণ গত ১৫ জানুয়ারির পর সর্বনিম্ন। সেদিন ২৪ ঘণ্টায় রোগী পাওয়া যায় ৩ হাজার ৪৪৭ জন।
তখনও দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়নি, যদিও দেশ যে এই পথেই যাচ্ছে, সেটি বোধা যাচ্ছিল।
পরীক্ষার বিপরীতে করোনা শনাক্তের হার পর পর দুই সপ্তাহ ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে গেলে করোনার ঢেউ ছড়িয়েছে বলে ধরা হয়। দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসার পর গত ৭ জানুয়ারি শনাক্তের হার ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে ক্রমেই চড়তে থাকে।
এক পর্যায়ে তৃতীয় ঢেউ নিশ্চিত হয় ২০ জানুয়ারি। সেদিন ২৪ ঘণ্টায় রোগীর সংখ্যা ছিল ১০ হাজার ৮৮০ জন।
এখন পর্যন্ত দেশে করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছে মোট ১৯ লাখ ২৩ হাজার ৩১ জনের দেহে। এদের মধ্যে সুস্থ হয়েছে ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৬৬ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার পাওয়া গেছে ১২ দশমিক ২০ শতাংশ। এটিও এক মাসেরও বেশি সময়ে সর্বনিম্ন হার।
এক মাস ৩ দিন আগে গত ১৩ জানুয়ারি শনাক্তের হার ছিল ১২ দশমিক ০৪ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের, এটি গত ২৩ জানুয়ারির পর সর্বনিম্ন। সেদিন ২৪ ঘণ্টায় ১৪ জনের মৃত্যুর তথ্য জানানো হয়েছিল।
এ নিয়ে এখন পর্যন্ত সারা দেশে ভাইরাসটিতে মৃত্যু হয়েছে ২৮ হাজার ৮২৭ জনের।
গত ২৪ ঘণ্টায় যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে ১০ জন পুরুষ, ৫ জন নারী।
মৃতদের মধ্যে একটি শিশু আছে। এ ছাড়া ২০ ঊর্ধ্ব ও ৮০ ঊর্ধ্ব একজন করে, ৪০ ঊর্ধ্ব, ৬০ ঊর্ধ্ব ও ৭০ ঊর্ধ্ব চার জন করে।
তৃতীয় ঢেউয়ে পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হারে গত ২৮ জানুয়ারি রেকর্ড হওয়ার পর দিন থেকেই মূলত শনাক্তের হার, ২৪ ঘণ্টায় রোগীর হার ক্রমেই কমতে থাকে।
তবে কিছুদিন রোগীর মৃত্যু উল্টো বেড়ে টানা তিন দিন ৪০ এর বেশি থাকে। সেটিও কমতে শুরু করেছে এক সপ্তাহ ধরে।
করোনা পরিস্থিতির উন্নতির মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ারও চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। চালু হয়েছে বই মেলা। করোনার কারণে ১ ফেব্রুয়ারির বদলে ১৫ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া বই মেলা শুরুতে দুই সপ্তাহ চলার কথা থাকলেও সেটি আরও বাড়ানোর আলোচনাও আছে।
ট্রেনে প্রতি আসনে যাত্রী বহন শুরু হয়েছে। তবে সমাবেশ ও জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা এখনও বহাল আছে।