নিজেকে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল, কখনও আইজিপি, আবার কখনও একজন সংসদ সদস্যের নিকটাত্মীয় বলে পরিচয় দিতেন। এসব পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। নানা সময় নানা ভূমিকায় থাকা এই ব্যক্তির নাম সালাউদ্দিন ভূইয়া।
প্রতারণার অভিযোগে মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর মহাখালী ডিওএইচএস থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
এ সময় তার কাছ থেকে সেনাবাহিনীর ইউনিফর্ম পরিহিত বাঁধাই করা একটি ফটোফ্রেম, সেনাবাহিনীর ব্যবহৃত একটি গেঞ্জি, ক্যাপ, মানিব্যাগ ও মেডেল, চারটি জাল লেটার প্যাড, একটি জাল সিল, দুটি জাল ওয়ার্ক অর্ডার, দুটি চেক বইসহ অন্যান্য জিনিস উদ্ধার করা হয়।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, ‘এক সময় মাছ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন সালাউদ্দিন। পরে প্রতারণায় জড়িয়ে পড়েন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির ভবনে অফিস কক্ষ ভাড়া নিয়ে নিজেকে ওই কোম্পানির মালিক পরিচয় দিতেন।’
র্যাব জানায়, সালাউদ্দিন বিভিন্ন গার্মেন্টস কোম্পানির কাছ থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে পণ্য কেনার আবেদন করতেন। পরে ভুয়া ক্রয়াদেশ পেয়ে গার্মেন্টস অ্যাকসেসরিজ কোম্পানিগুলোর ক্রয়াদেশ অনুযায়ী সম্পূর্ণ পণ্য ডেলিভারি করতেন। সালাউদ্দিন পণ্য ডেলিভারি পাওয়ার পর তাদের টাকা পরিশোধ না করে পণ্যগুলো বিভিন্ন কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দিতেন।
মঈন বলেন, ‘তার কাছে পাওনা টাকা ফেরত চাইলে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করতেন। এ ছাড়া নিজেকে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা আবার কখনও আইজিপির আত্মীয় বা সংসদ সদস্যের নিকটাত্মীয় পরিচয় দিতেন।’
পাশাপাশি ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি একজন ভুক্তভোগীসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান র্যাবের কাছে অভিযোগ দেয়। পরে র্যাব রাজধানীর মহাখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে সালাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে।
সালাউদ্দিনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেছে র্যাব।
র্যাব জানায়, প্রায় পাঁচ বছর ধরে তিনি এই ধরনের প্রতারণার সঙ্গে জড়িত। এভাবে প্রতারণার মাধ্যমে তিনি কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ করেছেন। বর্তমানে মহাখালীতে একটি অফিস নিয়ে এই অপরাধ করছিলেন। কোনো ঠিকানায় তিনি ছয় মাসের বেশি থাকেন না।
সালাউদ্দিনের নামে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তিনটি মামলা রয়েছে।
তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন র্যাব মুখপাত্র।