পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে খুন হওয়া আশুলিয়ায় এক পোশাকশ্রমিক অপারেটর মো. তানিম হত্যা মামলায় চারজকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।
ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ইসমত আরা বুধবার এ রায় দেন।
দণ্ডিত ব্যক্তিরা হলেন অন্য পোশাকশ্রমিক সোহেল রানা, ফরহাদ হোসেন, মো. আশিকুর রহমান ও নজরুল ইসলাম।
রায় দেয়ার সময় দণ্ডিতরা আদালতে ছিলেন। এ সময় তাদের বিমর্ষ দেখাচ্ছিল।
রায়ের বিবরণে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২২ জুলাই সকাল ৯টায় নিখোঁজ হন তানিম। তিন দিন পর আশুলিয়ার খাগান গ্রামের জঙ্গল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। বেওয়ারিশ হিসেবে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
সে সময় পুলিশ বাদী হয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা করে।
তানিমকে খুঁজে না পেয়ে তার স্ত্রী নূরুন্নাহার ১০ আগস্ট কাফরুল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
তানিমের হদিস না পেয়ে দণ্ডিত সোহেলসহ আসামিদের বিরুদ্ধে ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে নিহতের মা সাইদা সুলতানা অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ এনে মামলা করেন।
মামলাটি পরে আশুলিয়া থানাকে এজাহার হিসেবে নেয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। পরে তদন্তে বেরিয়ে আসে তানিম হত্যার ঘটনা।
দণ্ড পাওয়া আসামিরা তানিমের কণ্ঠ মোবাইলে রেকর্ড করে তার মায়ের কাছ থেকে মুক্তিপণ হিসেবে বিকাশে টাকা নেয়। সে সময় টাকা না দিলে তার ছেলেকে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়া হয়।
গ্রেপ্তারের পর আসামি সোহেল ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ওই সময় হত্যার ও তার সঙ্গে জড়িতদের নাম জানায়।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শাকিলা জিয়াসমিন মিতু নিউজবাংলাকে জানান, মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ৩০ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৬ জনের সাক্ষ্য শুনে বিচারক এ রায় দেন।
মামলায় দণ্ডিতদের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ৫ নভেম্বর অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়।
হত্যার ঘটনায় দণ্ডিতদের সবাইকে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে ৬ মাস করে সশ্রম কারাদণ্ডের কথা রায়ে উল্লেখ করা হয়।
আরেক ধারায় চাঁদাবাজি বা টাকা আদায়ের ঘটনায় সবাইকে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
রায়ে নিহতের মা সাঈদা সুলতানা সাংবাদিকদের বলেন, ‘রায়টি যেন দ্রুত কার্যকর করা হয়।’
দণ্ডিতদের আইনজীবীরা বলেন, তারা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।