গত এক বছরে চালের দাম কেজিতে ৬ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। প্রতি বছরই রমজান মাস এলে নিত্যপণ্য ও চালের দাম বেড়ে যায়। আসন্ন রমজানে চালের দাম বাড়বে না বলে আশ্বস্ত করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
সচিবালয়ে বুধবার সাংবাদিকদের খাদ্যসচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম এ কথা জানান।
চালের দাম বৃদ্ধি রমজানের আগেও অব্যাহত থাকবে কি না জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘রমজান উপলক্ষে আমি আপনাদের নিশ্চয়তা দিতে পারি চালের দাম বাড়বে না। কারণ খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি মার্চ থেকে শুরু হয়ে যাবে। মার্চ মাস থেকে ৫০ লাখ পরিবার ৩০ কেজি করে চাল পাবে। চালের দাম বাড়বে না ওই সময়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যদি ওরকম অবস্থা দেখি তাহলে ওএমএস আরও বাড়াব। খাদ্যের ব্যাপারে তো সরকারের কার্পণ্য নেই। খোলা বাজারে বিক্রিটা আরও বাড়াব। যদি প্রয়োজন হয় ভোক্তার স্বার্থে সরকারে চাল আমদানি করবে।’
নাজমানারা খানুম বলেন, ‘আমরা এখনই আমদানিতে যাচ্ছি না এই কারণে যে...কে বা কারা যেন প্রমাণ করতে চাচ্ছে, এত খাদ্য উদ্বৃত্ত বলা হচ্ছে, স্বয়ংসম্পূর্ণ বলা হচ্ছে, তার পরও তো আমদানি চলে। ইউএসডিএ বলছে, আমাদের উৎপাদন ভালো, তারপর তারা বলছে আমদানিও করতে হবে। আমরা চাচ্ছি আমদানি না করে যদি স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারি, তাহলে আমরা এটা এস্টাবলিস্ট করতে পারব, আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ।
‘আমার আজকে ২০ লাখ টনের বেশি খাদ্যশস্য মজুত আছে। এরপরও মিলাররা আমার কাছে চাল বিক্রি করতে চাচ্ছে। তার মানে কী? মোটা চালের দাম আর বাড়বে না। এটা কমেই যাবে। ধান উঠলে তো আরও কমবে। কোনো দৈব-দুর্বিপাক না হলে এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে বোরো চাল বাজারে চলে আসবে। ফলে তো ওরকম অবস্থা হওয়ার আশঙ্কা নেই।’
তেমন হলে সরবরাহ বাড়িয়ে দাম নিয়ন্ত্রণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
খাদ্যসচিব বলেন, ‘আমাদের অনেক রাইসমিল হয়ে গেছে। আমাদের উৎপাদনও বেশি, রাইসমিলও বেশি। এখন একজন দরিদ্র ভোক্তার ঘরেও পাঁচ কেজি চাল থাকে। এ ছাড়া কৃষক ও মিলারদের কাছেও ধান-চাল রয়েছে। আমাদের গুদামেও পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। উৎপাদনও ব্রেকইভেন পর্যায়ে।
‘আমাদের উৎপাদন হয়েছে। এগুলো যদি কৃষকের ঘরে ও মিলারদের কাছে থাকে তাহলে বাজারে কোথা থেকে আসবে। এ জন্য ধানের দাম বেশি, ধানের দাম বেশি বিধায় চালের দাম বেশি।’
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, সরকারের গুদামে বর্তমানে ১৯ লাখ ৬৩ হাজার টন খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে। এর মধ্যে ১৭ লাখ ১৫ হাজার টনের বেশি চাল ও গম ২ লাখ ৪৮ হাজার টন। তারপরও খুচরা বাজারে চালের দাম তুলনামূলক বেশি।