বিজ্ঞান লেখক ও ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ হত্যা মামলার আসামিপক্ষের সাফাই সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। সিলেটের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরুল আমীন বিপ্লবের আদালতে মঙ্গলবার এ কার্যক্রম হয়।
আসামিপক্ষের হয়ে সাফাই সাক্ষী দেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. নজরুল ইসলাম, ইব্রাহীম মিয়া ও দেলোয়ার হোসেন।গত ৮ ফেব্রুয়ারি চাঞ্চল্যকর এ মামলার আসামি পক্ষের সাফাই সাক্ষীর তারিখ ছিল। তবে সেদিন সাক্ষ্যগ্রহণ না করে মঙ্গলবার পরবর্তী শুনানির আদেশ দেন বিচারক নুরুল আমীন বিপ্লব।মামলার আসামীপক্ষে আইনজীবী মনির উদ্দিন বলেন, ‘দুই পক্ষ ১ মার্চ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করবেন। এরপর মামলার রায়ের তারিখ ঠিক হবে।অনন্ত হত্যা মামলায় ইতোমধ্যে ২৯ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে। সিলেট নগরের সুবিদবাজারে নুরানি আবাসিক এলাকায় নিজ বাসার সামনে ২০১৫ সালের ১২ মে খুন হন অনন্ত বিজয় দাশ। ৩২ বছরের অনন্ত পেশায় ব্যাংকার ছিলেন।
লেখালেখির পাশাপাশি ‘যুক্তি’ নামের বিজ্ঞানবিষয়ক একটি পত্রিকার সম্পাদনা করতেন তিনি। এ ছাড়া বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন অন্তত। হত্যার পর অনন্তের বড় ভাই রত্নেশ্বর দাশ সিলেট বিমানবন্দর থানায় অজ্ঞাতপরিচয় চারজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
এজাহারে বলা হয়, বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখির কারণে অনন্তকে ‘উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী’ পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।বাদীপক্ষের আইনজীবী সূত্রে জানা যায়, মামলাটি পুলিশ থেকে অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) স্থানান্তরিত হয়। সিআইডির পরিদর্শক আরমান আলী তদন্ত করে ২০১৭ সালের ৯ মে অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেন। এতে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক ১০ জনকে অব্যাহতির সুপারিশ করে ৬ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।অভিযুক্তরা হচ্ছেন, সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার আবুল হোসেন, খালপাড় তালবাড়ির ফয়সাল আহমদ, সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বিরেন্দ্রনগরের (বাগলী) মামুনুর রশীদ, কানাইঘাটের পূর্ব ফালজুর গ্রামের মান্নান ইয়াইয়া ওরফে মান্নান রাহী ওরফে এ বি মান্নান ইয়াইয়া ওরফে ইবনে মঈন, কানাইঘাটের ফালজুর গ্রামের আবুল খায়ের রশীদ আহমদ এবং সিলেট নগরের রিকাবীবাজার এলাকার সাফিউর রহমান ফারাবী ওরফে ফারাবী সাফিউর রহমান।তাদের মধ্যে ফারাবী ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। অভিযুক্ত আসামিদের মধ্যে মান্নান রাহী আদালতে অনন্ত হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
২০১৭ সালের ২ নভেম্বর মান্নান হঠাৎ অসুস্থ হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আসামিদের মধ্যে আবুল হোসেন, ফয়সাল আহমদ ও মামুনুর রশীদ পলাতক।