বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কবে চালু হবে বিমানের টিকিট বিক্রির ওয়েবসাইট?

  •    
  • ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ২২:২২

এভিয়েশেন বিশেষজ্ঞ ও বিমান পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য কাজী ওয়াহেদুল আলম বলেন, ‘প্রযুক্তির যুগে বিমান প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছে না এটা অবিশ্বাস্য। ছয় মাস ধরে টিকিট বিক্রির ওয়েবসাইট বন্ধ, এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।’

খুব শিগগির চালু হবে বলে সাময়িকভাবে বন্ধ হওয়ার ছয় মাস গেলেও চালু করা যায়নি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের অনলাইনে টিকিট বিক্রির ওয়েবসাইটটি। এটি কবে আবার চালু হবে এ বিষয়ে কোনো স্পষ্ট ধারণাও নেই রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের।

প্রযুক্তির যুগে সব সেবাই অনলাইনের মাধ্যমে হাতের মুঠোয় ধরা দিচ্ছে। ফ্লাইটের টিকিট থেকে শুরু করে বাসের টিকেট সবই এখন কেনা যায় অনলাইনের মাধ্যমে। দেশি-বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোও এজেন্ট পদ্ধতিতে টিকিট বিক্রি বাদ দিয়ে নিজস্ব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে টিকিট কেনাবেচাকে উৎসাহিত করে আসছে। ব্যতিক্রম শুধু বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।

বিমান যে ওয়েবসাইটটির মাধ্যমে টিকিট বিক্রি করে আসছিল সেটি গত ১১ আগস্ট থেকে বন্ধ। ওয়েবসাইটে টিকিট বিক্রি বন্ধের সময় বিমান সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল, খুব শিগগিরই এই ওয়েবসাইট চালু হবে। কিন্তু ছয় মাসেও সে সময় আসেনি।

ওয়েবসাইটে টিকিট বিক্রি বন্ধ করার সময় বিমান বিজ্ঞপ্তিতে বলেছিল, ‘বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স দেশীয় সার্ভিস প্রোভাইডারদেরকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ২০১৯ সালে একটি প্রতিষ্ঠানকে পারস্পারিক সমঝোতার ভিত্তিতে সাময়িকভাবে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের টিকিট বিক্রির দায়িত্ব দেয়।

‘কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি বিমানের প্রত্যাশিত কার্যক্রম সম্পূর্ণ বাস্তবায়নে বিভিন্ন ধাপে বার বার ব্যর্থ হয়। অবশেষে ২০২১ সালের ১০ আগস্ট থেকে সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অনৈতিকভাবে বিমানকে সংশ্লিষ্ট সেবা দেয়া বন্ধ করে ও জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির প্রয়াস গ্রহণ করে।’

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বিশ্ব স্বীকৃত সার্ভিস প্রোভাইডারের মাধ্যমে শিগগির উন্নত অনলাইন সেবা নিশ্চিত করতে যাচ্ছে বলে সেসময় প্রতিশ্রুতিও দেয়া হয়।

তবে বিজ্ঞপ্তি দেয়ার পর কাজ আর এগোয়নি।

এদিকে অনলাইনে টিকিট বিক্রি বন্ধ থাকলেও বিমানের বিক্রয় কার্যালয় ও ট্রাভেল এজেন্টদের মাধ্যমে টিকিট বিক্রি চলছে।

সাধারণত ট্রাভেল এজেন্টদের মাধ্যমে টিকিট বিক্রি করতে হলে এয়ারলাইন্সগুলোকে সেই প্রতিষ্ঠানকে নির্দিষ্ট হারে কমিশন দিতে হয়। ক্ষেত্র বিশেষে সেটি ২০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে।

অনলাইনে টিকিট বিক্রি না হওয়ায় বিমানকে এখন নির্ভর করতে হচ্ছে ট্রাভেল এজেন্টদের উপরই। এতে একদিকে যেমন বিমানের আয়ে টান পড়ছে অন্য দিকে যাত্রীদেরও গুনতে হচ্ছে বাড়তি অর্থ।

বিমান কর্মকর্তারা জানান, ২০১৯ পর্যন্ত অনলাইনে বিমানের টিকিট বিক্রির প্ল্যাটফর্ম ছিল বিদেশি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান জ্যাপওয়েজ। তবে সে সময় টিকিট রিফান্ড ও ভুল টিকিটিংসহ নানা জটিলতায় পড়তে হয় বিমানকে। টিকিট কাটতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়ার অভিযোগ পাওয়া যেত প্রতিদিন। এ কারণেই পরে ট্রাভেল শপ নামে একটি দেশি প্রতিষ্ঠানকে এ দায়িত্ব দেয়া হয়।

অভিযোগ রয়েছে, সময় মতো সার্ভারের ভাড়া পরিশোধ না করায় সার্ভার সেবা প্রদানকারী সংস্থা অ্যামাজন বিমানের সার্ভারটি বন্ধ করে দেয়। এতেই তৈরি হয় বিপত্তি। যদিও এ বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতে চাননি বিমানের কোনো কর্মকর্তাই।

এভিয়েশেন বিশেষজ্ঞ ও বিমান পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য কাজী ওয়াহেদুল আলমের মতে, অনলাইনে টিকিট বিক্রি বন্ধ থাকায় যাত্রী ও বিমান দুপক্ষই ক্ষতির মুখে পড়ছে।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রযুক্তির যুগে বিমান প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছে না এটা অবিশ্বাস্য। ছয় মাস ধরে টিকিট বিক্রির ওয়েবসাইট বন্ধ, এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।’

বিমানের প্রতি বছর লোকশান গোনার পেছনে টিকিট বিক্রির ওয়েবসাইট বন্ধ থাকাও একটি কারণ বলে জানান তিনি। বলেন, ‘আগের ওয়েবসাইটটিও যে খুব ভালো ছিল এমন নয়। তারপরেও সেটা দিয়ে টিকিট কাটা যেত।

‘কিন্তু এখন যে পরিস্থিতি চলছে, তাতে কর্মকর্তাদের অদক্ষতা, অবিবেচনা ও কাজ করার অনীহার বিষয়টিই প্রকাশ পাচ্ছে।’

কাজী ওয়াহেদুল আলম জানান, এজেন্টদের মাধ্যমে টিকিট বিক্রি করলে তাদের কিছু কমিশন দিতে হয়। তার উপর তাদের ইনটেনসিভ দিতে হয় ও আইএটিএর (ট্রাভেল এজেন্টদের আন্তর্জাতিক সংগঠন) কিছু চার্জ আছে, সেটিও পরিশোধের বিষয় রয়েছে। যদি কোনো এয়ারলাইন্স ট্রাভেল এজেন্টের মাধ্যমে টিকিট বিক্রি করে তাহলে সেই টাকা প্রথমে যাবে আইএটিএ’র ফান্ডে তারপর সেটি আসবে সেই এয়ারলাইন্সের অ্যাকাউন্টে।

এই পুরো বিষয়টি সময় সাপেক্ষ বলে জানান তিনি।

অনলাইনে টিকিট কাটার সুবিধার দিক নিয়ে তিনি বলেন, ‘যদি অনলাইনে টিকিট বিক্রি করা হয় তাহলে সরাসরি এয়ারলাইন্স টাকাটা পেয়ে যাচ্ছে। তার উপর যে কমিশন ট্রাভেল এজেন্টকে দিতে হয় এয়ারলাইন্স চাইলে অনলাইনের টিকিট ক্রেতাদের সেটি ডিসকাউন্টও দিতে পারে। এতে এয়ারলাইন্স ও যাত্রী দুপক্ষই লাভে থাকল।’

ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিমান আবার কমে টিকিট বিক্রিতে ফিরবে তার কোনো তথ্য জানাতে পারেননি প্রতিষ্ঠানটির কোনো কর্মকর্তাই। এটি নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতেও আগ্রহী নন কেউ।

বিমানের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওয়েবসাইটে টিকিট বিক্রি শুরু হতে আরও অন্তত এক মাস সময় লাগবে।’

তবে নির্দিষ্ট করে কোনো তারিখের কথা বলতে পারেননি তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর