একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা উপমহাদেশের প্রবাদপ্রতিম সংগীতশিল্পী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পৃথক বিবৃতিতে তারা প্রয়াতের আত্মার শান্তি কামনা করে তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।
বাংলা আধুনিক গানের স্বর্ণযুগের শিল্পীদের শেষ তারা সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় মারা গেছেন মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। ৯০ বছর বয়সে ভারতের কলকাতায় হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
২৬ জানুয়ারি অসুস্থ হয়ে পড়েন সন্ধ্যা। শৌচাগারে পড়ে গিয়ে ব্যথা পেয়েছিলেন এই কণ্ঠের জাদুকর। এরপর বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন, সঙ্গে যোগ হয়েছিল শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা।
পশ্চিমবঙ্গের এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। সে সময় হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, তার ফুসফুসে সংক্রমণ হয়েছে। তার চিকিৎসায় মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে অসামান্য অবদান রেখেছেন এই কণ্ঠশিল্পী। যুদ্ধের সময় গোটা দেশে তোলপাড়। উদ্বাস্তু লাখো মানুষের আশ্রয় হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গে। সেই উদ্বাস্তুদের পাশে দাঁড়াতে গণ-আন্দোলনে যোগ দেন সন্ধ্যা।
গান গেয়ে অর্থ সংগ্রহ করে সেই অর্থ তুলে দেন উদ্বাস্তুদের কল্যাণে। এখানেই শেষ নয়, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য পাঠান অর্থ। বাংলাদেশের পক্ষে গড়ে তোলেন জনমত।
শিল্পী সমর দাস যখন বাংলাদেশে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র স্থাপন করেন, সেই বেতার কেন্দ্র তৈরিতে আর্থিক সহযোগিতা দিয়েছেন তিনি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তি উপলক্ষে গেয়েছিলেন ‘বঙ্গবন্ধু তুমি ফিরে এলে’ গানটি। বাংলাদেশ কখনও ভুলে যায়নি এই অকৃত্রিম বন্ধু ও তার অবদানকে।
দেশ স্বাধীনের পর প্রথম একুশে ফেব্রুয়ারির অনুষ্ঠানে বিদেশি শিল্পী হিসেবে আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন সরকারের।
শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু উপমহাদেশের সংগীত জগতের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান এ দেশের জনগণ চিরদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।'
বরেণ্য এই শিল্পীর মৃত্যুতে শোকার্ত প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেছেন মুক্তিযুদ্ধে তার অবদানের কথাও।
শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উপমহাদেশে গানের মুগ্ধতা ছড়ানোর পাশাপাশি মহান মুক্তিযুদ্ধে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’