বিমানের ভাড়া নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যগামীদের দুর্ভোগ কমাতে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী।
তিনি বলেছেন, ‘প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যাত্রীদের কীভাবে ভর্তুকি দিয়ে সহযোগিতা করা যায় তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা চলছে।’
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একটি কনভেনশন হলে সিলেট চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
মধ্যপ্রাচ্য দেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার। সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত, ওমানসহ এই অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে অর্ধকোটিরও বেশি বাংলাদেশি বিভিন্ন খাতে কাজ করেন।
এসব দেশে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসসহ দেশি-বিদেশি এয়ারলাইনসগুলো ফ্লাইট পরিচালনা করে। তবে ভাড়া বৃদ্ধির কারণে বিপাকে আছেন যাত্রীরা।
এয়ারলাইনস ও ট্রাভেল এজেন্টরা বলছেন, শ্রমবাজার খুলে যাওয়ায় একটি টিকিটের বিপরীতে একাধিক চাহিদা তৈরি হচ্ছে। তার ওপর জেট ফুয়েলের দাম বৃদ্ধি এবং এয়ারপোর্টগুলোর বিভিন্ন ফি বেড়ে যাওয়ায় টিকিটের দাম ঊর্ধ্বমুখী।
ভাড়া বৃদ্ধির কারণে মধ্যপ্রাচ্যগামী যাত্রীদের খুব কষ্ট হচ্ছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ভাড়া বৃদ্ধির প্রক্রিয়াটা শুধু বিমানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি আন্তর্জাতিক বিষয়।
‘মধ্যপ্রাচ্যগামী কর্মীরা সাধারণ ফ্লাইটের ৪-৫ দিন আগে তাদের ভিসা হওয়ার সংবাদ পান। তাই কম সময়ের মধ্যে টিকিট কাটতে গিয়ে তাদেরকে চড়া মূল্য দিতে হচ্ছে। কিন্তু দেড়-দুই মাস আগে টিকিট কাটা গেলে এই সমস্যা থাকত না। অর্ধেক মূল্যে তারা টিকিট কাটতে পারতেন।’
তিনি বলেন, ‘কোভিডের কারণে যাত্রীদের চাপ বেশি, অন্যদিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কাজ চলায় ফ্লাইটের সংখ্যাও বাড়ানো যাচ্ছে না। বিমানবন্দর পুরোপুরি অপারেশনে যাওয়ার পর হয়তো এই সমস্যা থাকবে না।’
শিগগিরই ঢাকা-নিউইয়র্ক বিমানের ফ্লাইট চালু হবে বলে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘২৭ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্ক থেকে একটি অডিট টিম আসছে। কিছুদিন পর তাদের দ্বিতীয় টিম আসবে। আমরা আশাবাদী খুব শিগগির নিউইয়র্কের সঙ্গে সরাসরি ফ্লাইট চালু করতে পারব।
‘সিলেট থেকেও যাতে ভবিষ্যতে নিউইয়র্ক ও টরেন্টোতে ফ্লাইট পরিচালনা করা যায়, এ বিষয়টি আমাদের পরিকল্পনায় রয়েছে।’
মতবিনিময় সভায় যোগ দেয়ার আগে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ ও নতুন টার্মিনাল ভবনের কাজ পরিদর্শন করেন প্রতিমন্ত্রী।
এ সময় প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ওসমানী বিমানবন্দরে নতুন আন্তর্জাতিক টার্মিনালের কাজ দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেষ করা হবে। এরপর শুধু হিথ্রো নয়, বিশ্বের বিভিন্ন গন্তব্যে এই বিমানবন্দর থেকে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে।
‘এরইমধ্যে বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ ও শক্তি বৃদ্ধির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন নতুন আন্তর্জাতিক টার্মিনালের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার অপেক্ষা।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সিলেট বিমানবন্দরে যে টার্মিনাল আছে, সেটা অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনার জন্য উপযুক্ত। আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জন্য এ টার্মিনাল উপযোগী নয়। তারপরও যুক্তরাজ্যের ডিপার্টমেন্ট অব ট্রান্সপোর্টের পরামর্শ নিয়ে এ টার্মিনাল দিয়ে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করা হচ্ছে।’