দেশে বায়ুদূষণের প্রধান উৎসগুলো চিহ্নিতকরণ ও তা কমাতে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করে আদালতে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে অস্বাস্থ্যকর, অতি অস্বাস্থ্যকর ও বিপজ্জনক বায়ু থেকে জনসাধারণকে রক্ষায় সতর্কীকরণ পদ্ধতি প্রয়োগ এবং পোড়ানো ইটের বিকল্প কী করা যায় তা নিয়েও কর্মপরিকল্পনা করতে বলেছে আদালত।
আগামী চার মাসের মধ্যে এ প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বায়ুদূষণ-সংক্রান্ত এক রিটের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) এ রিট করেছে। আদালতে বেলার পক্ষে শুানানি করেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শ্রী সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।
আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালত রুল জারি করে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ ও জনস্বাস্থ্য রক্ষায় বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না জানতে চেয়েছে। একই সঙ্গে একটি কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং বায়ুর মান উন্নয়নের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় সচিব, পরিবেশ সচিব, শিল্প সচিবসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
সম্প্রতি শিকাগো ইউনিভার্সিটির এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউট প্রকাশিত ‘এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্স’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী বায়ুদূষণের কারণে বাংলাদেশে মানুষের গড় আয়ু কমেছে প্রায় পাঁচ বছর চার মাস এবং ঢাকায় কমেছে প্রায় সাত বছর সাত মাস।
বায়ুর মান বা একিউআই স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে তা খুবই অস্বাস্থ্যকর এবং তা স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা হিসেবে বিবেচিত হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ ও অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছে তারা।
স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) তথ্য মতে, গত ৬ বছরে সব মিলিয়ে ৩৮ দিন বিশুদ্ধ বাতাস পাওয়া গেছে যার অর্থ বছরে ৭ দিনেরও কম বিশুদ্ধ বায়ু সেবন করতে পারছে এ নগরবাসী।