বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ছেলের চেয়ে বাবা ‘ছোট’, সমাধানের আগেই বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু

  •    
  • ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৭:১৪

বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলীর স্ত্রী সুফিয়া বেওয়া বলেন, ‘ভাতা বন্ধ হওয়ার পর থেকে উনি অসুস্থ হয়ে পড়লেন। ঠিকমতো চিকিৎসা করতে পারলাম না। অসুস্থতার কারণে উনি মইরাই গেলেন। আমরা অফিস-আদালতে অনেক দৌঁড়াইছি। কেউ সাড়া দেয় নাই।’

তিন সন্তান রেখে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন কুড়িগ্রামের আকবর আলী। সে সময় তার বয়স ৪৩ বছর।

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভারতীয় তালিকা ও ২০০৫ সালের বেসামরিক গেজেটেও নাম আছে ভূরুঙ্গমারী উপজেলার চরভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের ধুলার কুটি গ্রামের আকবরের। ২০০৮ সালের ১ অক্টোবর থেকে পেয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাতা।

তবে ২০২০ সালে অনলাইনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য পূরণ করার সময় জন্ম তারিখের ত্রুটির কারণে ভাতা বন্ধ হয়ে যায়। জন্ম নিবন্ধন সনদ অনুযায়ী আকবরের জন্ম তারিখ ১৯২৮ সালের ১১ আগস্ট। তবে ২০০৮ সালে করা জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার জন্ম তারিখ ১৯৭১ সালের ১০ মে।

অথচ জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী আকবরের বড় ছেলে আমির হোসেনের জন্ম তারিখ ১৯৬০ সালের ২ মার্চ। সরকারি নথি মোতাবেক বাবার চেয়ে ছেলে ১১ বছরের বড়।

স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা হযরত আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি, আকবর আলী আর লস্কর আলী চাচাতো ভাই। তিনজনই যুদ্ধ করেছি, মুক্তিযোদ্ধা ভাতাও পেয়েছি। হঠাৎ ভোটার আইডি কার্ডের সমস্যার জন্য আকবরের ভাতা বন্ধ হয়ে যায়।’

আকবর আলী ও তার বড় ছেলে আমির হোসেনের জাতীয় পরিচয়পত্র

জন্ম তারিখ সমস্যার সমাধানের আগেই এ বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি মৃত্যু হয় আকবরের।

তার স্ত্রী সুফিয়া বেওয়া বলেন, ‘ভাতা বন্ধ হওয়ার পর থেকে উনি অসুস্থ হয়ে পড়লেন। ঠিকমতো চিকিৎসা করতে পারলাম না। অসুস্থতার কারণে উনি মইরাই গেলেন। আমরা অফিস-আদালতে অনেক দৌঁড়াইছি। কেউ সাড়া দেয় নাই।’

ছেলে আমির বলেন, ‘এই জন্ম তারিখ ঠিক করার জন্য যেখানেই গেছি খালি ট্যাহা-ট্যাহা করে। তাও আমগো বাবার জন্ম তারিখ ঠিক হয়নি। আমরা ব্যর্থ হয়া গেছি গা।’

“দাদার বয়স ঠিক করতে আমরা ঢাকা গেছি। সেখানে বলা হয়, ‘আমরা পারব না। এটা রংপুর থেকে ঠিক করবে।’ রংপুরে গেছি, সেখানে আমরা পাত্তাই পাই না। বহু টাকাপয়সা খরচ করেও কোনো লাভ হয়নি। দাদা মারাই গেল। তবু ভাতা চালু হয়নি আজও। অন্যের ভুলের খেসারত আমাদেরকে দিতে হচ্ছে,’” বলেন আকবরের নাতি রঞ্জু।

এ বিষয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম রাকিব জানান, আকবর আলীর জন্ম তারিখ সংশোধনের আবেদন নিষ্পত্তির জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।

রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জিএম সাহাতাব উদ্দিন এতদিন বিষয়টি জানতেন না জানিয়ে বলেন, ‘বিষয়টি আমার নজরে এলো। আমি যত দ্রুত সম্ভব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।’

এ বিভাগের আরো খবর