বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিত্তশালী পঞ্চাশোর্ধ পুরুষ তাদের টার্গেট

  •    
  • ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ২৩:২৫

ডিবি গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘চক্রটি পঞ্চাশোর্ধ পুরুষ এবং টাকাওয়ালা দেখে টার্গেট ঠিক করতো। ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাতো। এক্সসেপ্ট করার পর সম্পর্ক গড়ে তুলতো। কিছুদিন যাওয়ার পর টার্গেট করা ব্যক্তিকে একান্তে সময় কাটানোর প্রস্তাব দিয়ে বাসায় ডেকে আনতো। আপত্তিকর ছবি, ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করতো। অনেক ভুক্তভোগীর কাছ থেকে এসব ছবি-ভিডিও দেখিয়ে একাধিকবারও টাকা নিয়েছে তারা।’

প্রতারণার শুরুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিত্তবান পঞ্চাশোর্ধ পুরুষদের খুঁজে বের করেন গোলাম রসুল টুটুল। তার স্ত্রী বিউটি আক্তারকে দিয়ে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠান। রিকোয়েস্ট গ্রহণ করার পর ম্যাসেঞ্জারের চ্যাটিং ও ভিডিও কলের মাধ্যমে ওই ব্যক্তিকে ভালোবাসার ফাঁদে ফেলা হয়। সম্পর্ক শুরুর কয়েকদিনের মধ্যেই বাসায় আসতে বলেন বিউটি।

টার্গেট করা ব্যক্তি বিউটির ডাকে সাড়া দিলে টুটুল ও তার সহযোগীরা একটি বাসা প্রস্তুত করে রাখেন। ওই ব্যক্তি আসার পরই ‘রুম ডেট’র নাম করে বিউটির সঙ্গে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন টুটুল ও তার সহযোগীরা।

এই ছবি ও ভিডিও ধারণ করার পর শুরু হয় ব্ল্যাকমেইল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও স্বজনদের কাছে এই ছবি এবং ভিডিও ক্লিপ পাঠানোর হুমকি দিয়ে আদায় করেন লাখ লাখ টাকা।

ভার্চুয়াল মাধ্যমে পরিচয় হওয়ার পর গত ২৭ জানুয়ারি ষাটোর্ধ সাইদুল ইসলাম (ছদ্মনাম) নামে একজন বেসরকারি অফিসের কর্মকর্তা টুটুল-বিউটির ফাঁদে পড়েন।

ওই দিন দুপুরে তাকে মুগদার কুমিল্লা পট্টিতে একটি বাসায় আসতে অনুরোধ করা হয়। সেখানে তাকে ফাঁদে ফেলে ৫ লাখ ২১ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। চাহিদা মতো টাকা দিয়ে ছাড়া পাওয়ার পর ২৮ জানুয়ারি যাত্রাবাড়ি থানায় মামলা করেন এই ভুক্তভোগী।

তার মামলা তদন্ত করতে গিয়ে ১২ ফেব্রুয়ারি মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগ টুটুল, বিউটিসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে। বাকি দুজন হলেন- টুটুল-বিউটির সহযোগী শুভ ও আফজাল।

তাদের তিন দিনের রিমান্ড পেয়েছে ডিবি পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তদন্ত কর্মকর্তারা জানতে পেরেছেন, এই পর্যন্ত অন্তত ২৫ জনকে তারা টার্গেট করে ফাঁদে ফেলে টাকা হাতিয়েছেন। প্রতিজন থেকে কমপক্ষে ৫ লাখ করে নিয়েছেন তারা।

ডিবি গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘চক্রটি পঞ্চাশোর্ধ পুরুষ এবং টাকাওয়ালা দেখে টার্গেট ঠিক করতো। ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাতো। এক্সসেপ্ট করার পর সম্পর্ক গড়ে তুলতো। কিছুদিন যাওয়ার পর টার্গেট করা ব্যক্তিকে একান্তে সময় কাটানোর প্রস্তাব দিয়ে বাসায় ডেকে আনতো। আপত্তিকর ছবি, ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করতো। অনেক ভুক্তভোগীর কাছ থেকে এসব ছবি-ভিডিও দেখিয়ে একাধিকবারও টাকা নিয়েছে তারা।’

তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তার বিউটি ও টুটুল স্বামী-স্ত্রী। তাদের চক্রে শুভ ও আফজালসহ আরও একাধিক সদস্য রয়েছে। মূলত টুটুলের স্ত্রীর কাজ মধ্যবয়সী পুরুষদের বাসায় আনা। এরপর চক্রের সদস্যরা ভুক্তভোগীকে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় করে।’

আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে মশিউর রহমান জানান, তাদের মোবাইল ফোন চেক করে এবং জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে অন্তত ২৫ ব্যক্তিকে বাসায় ডেকে কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছে তারা। এই ভুক্তভোগীদের বেশির ভাগই পঞ্চাশোর্ধ। এই ফাঁদে আটকানোর পর ভুক্তভোগীরা পরিবার-আইনশৃঙ্খলাবাহিনী কারো কাছেই কিছু জানাননি।

এ ধরণের প্রতারকদের ফাঁদের পা না দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ডিসি মশিউর রহমান। তিনি বলেন, ‘অপরিচিত নারীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব তৈরি করার আগে সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যাচাই বাছাই না করে সম্পর্কে জড়ানো যাবে না। বিরত থাকাই সবচেয়ে নিরাপদ।’

কেউ প্রতারিত হলে সঙ্গে সঙ্গে থানায় অভিযোগ জানানোর অনুরোধ জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

এ বিভাগের আরো খবর