শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে পণ্য পরিবহন ও যাত্রী পারাপারে চাহিদা অনুযায়ী ফেরি সংকটের কারণে দুর্ভোগ লেগেই আছে। জুনে চালু হচ্ছে পদ্মা সেতু, এর মধ্যে আর ফেরি বাড়ছে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে বিআইডব্লিউটিসি।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যাত্রীদের রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে দুর্ভোগ কমছেই না। সাত মাস ধরে এ রুটে অনেকাংশে অচলাবস্থা চলছে। এখন পাঁচটি ফেরি দিয়ে চলছে অ্যাম্বুলেন্স ও ব্যক্তিগত ছোট গাড়ি পারাপার।
বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাউদ্দিন নিউজবাংলাকে জানান, ২০২১ সালের জুলাই ও আগস্টে নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে পদ্মা সেতুর তিনটি পিলারে চারবার ফেরির ধাক্কা লাগে। এতে আহত হন বেশ কয়েকজন যাত্রী। ফেরির ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেতুর পাইল ক্যাপ।
এই পরিস্থিতিতে দুর্ঘটনা এড়াতে ১৮ আগস্ট থেকে এই পথে ফেরি চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করা হয়। এরপর কয়েক দফায় সীমিত আকারে ফেরি চালুর পর পরই কর্তৃপক্ষ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিল।
তিনি জানান, একপর্যায়ে শরীয়তপুরের জাজিরার মাঝিকান্দিতে স্থানান্তর করা হয় ফেরিঘাট। ওই রুটের বিভিন্ন পয়েন্টে ডুবোচর জেগে ওঠায় বন্ধ রাখতে হয় ফেরি চলাচল। গত ৭ নভেম্বর থেকে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত পাঁচটি ফেরি দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ও ছোট গাড়িতে যাত্রী পারাপার শুরু করা হয়।
বিআইডব্লিউটিসি আরও জানায়, ফেরিতে বন্ধ রয়েছে পণ্যবাহী ট্রাক ও বড় গণপরিবহন পারাপার। গত ৭ ডিসেম্বর থেকে শিমুলিয়া-মাঝিকান্দি রুটে ২৪ ঘণ্টা ফেরি সার্ভিস চালু হয়। এ রুটে দিনের বেলা দুটি ফেরি ও সন্ধ্যার পর চারটি ফেরি দিয়ে যাত্রী ও ব্যক্তিগত গাড়ি পারাপার চলছে।
বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তা সালাউদ্দিন বলেন, ‘আগামী জুনে যেহেতু পদ্মা সেতু চালু হচ্ছে, তাই এ রুটে ফেরির সংখ্যা বাড়ানোর আর সুযোগ নেই।’
বাংলাবাজার ঘাটে শাহ্ আলম নামে যাত্রী বলেন, ‘পদ্মা নদী এখন শান্ত। নৌ-চ্যানেলে ডুবোচরে ফেরি আটকে যাওয়ার শঙ্কা নেই। তবু শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে ফেরি সংখ্যা না বাড়ানো এবং পণ্যবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাস পারাপার বন্ধের কারণে ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। এত সমস্যার পরও ফেরি বাড়ছে না।’
বরিশালের ট্রাকচালক আয়নাল মাতুব্বর বলেন, ‘বাংলাবাজার ঘাটে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। অথচ ঘাটেই বড় বড় ফেরি নোঙর করা আছে। অজ্ঞাত কারণে ফেরি চলাচল করছে না।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের শিমুলিয়া ঘাটের উপমহাব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পদ্মায় পানির উচ্চতা আগের চেয়ে কমেছে। সেই সঙ্গে স্রোতও আগের চেয়ে কিছুটা কম। তবে জুনে পদ্মা সেতু চালু হলে এ রুটে ফেরির তেমন প্রয়োজন থাকবে না। তাই আপাতত আর ফেরির সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে না।’