প্রতি তিন বছরে একবার আগাম বন্যায় তলিয়ে যায় হাওর এলাকার ধান। সেই সমস্যা থেকে বাঁচতে আগাম চাষ করলে ধান নষ্ট হয়ে যায় শীতে।
এ সমস্যার সমাধানে শীত সহিষ্ণু জাতের ধান উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিরি) ও আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ইরি)। অর্থায়ন করেছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশন।
নতুন জাতটির নাম দেয়া হয়েছে বঙ্গবন্ধু ধান ১০০। হবিগঞ্জের নাগুড়ায় বিরির জমিতে এই ধানের চারা উদ্ভাবন করা হয়েছে।
সম্প্রতি পরীক্ষণ প্লট পরিদর্শন করেছেন বিরির মহাপরিচালক শাহজাহান কবির ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস।
শাহজাহান কবির নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রতি তিন বছরে একবার মার্চ মাসের চৈতালি ঢল আর এপ্রিল মাসের বৈশাখী ঢলে হাওর এলাকার ফসল তলিয়ে যায়। আগাম চাষ করলে ধানে চিটা হয়ে যায়। এই সমস্যা সমাধানে নতুন জাত উদ্ভাবন শুরু হয় এবং এতে সমাধান এসেছে।
‘পরীক্ষণ প্লট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে কিশোরগঞ্জের নিকলি হাওর, হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার শিবপাশা বাকাটিয়ার হাওর, বানিয়াচং উপজেলার মকার হাওর, নবীগঞ্জ উপজেলার গুঙ্গিয়াজুরী হাওর, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর হাওর, শনির হাওর ও মাটিয়ান হাওর।’
বিরির মহাপরিচালক আরও বলেন, ‘আপনারা জানেন যে হাওরের কৃষকরা বেশি ফলন চান। এই ধানে প্রতি হেক্টরে সাত টন ফলন হবে। আমরা এই ধান নিয়ে আরও গবেষণা করব, যেন ফলন ১০ টন পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া যায়। পর্যায়ক্রমে আরও বেশি ফলনশীল কয়েকটি জাত অবমুক্ত করা হবে।’
বিরির পরিচালক মোজাম্মেল হক বলেন, ‘পরীক্ষণ ফিল্ডে নতুন এই জাতের বেশ কয়েকটি লাইন দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। এ জাতটি নিয়ে আমরা বেশ আশাবাদী। শিগগিরই এই ধান নতুন জাত হিসেবে অবমুক্ত করা হবে। এতে হাওরের কৃষক ভাইরা অনেক উপকৃত হবেন।
‘বঙ্গবন্ধু ধান ১০০-তে ব্রি-২৮ ধানের মতো দেড় শ দিনে ফসল কাটার উপযোগী হবে। অক্টোবরেই এর বীজতলা তৈরি করা যাবে। শীতে কোনো ক্ষতি হবে না।’