ময়মনসিংহ সদরের ঘাগড়া ইউনিয়নে আটক হওয়া বড় বাঘডাশাটিকে চার দিন পর বনে ছেড়ে দিয়েছে বন বিভাগ।
মধুপুর গড়ে রোববার বেলা তিনটার দিকে প্রণীটিকে ছেড়ে দেয়া হয়।
নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ময়মনসিংহ রেঞ্জ অফিসের বন কর্মকর্তা মেজবাইল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে প্রাণীটিকে আমাদের হাতে তুলে দেন ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম। গত কয়েকদিন প্রাণীটিকে ভালো করে খাবার না দেয়ায় দুর্বল হয়ে পড়েছিল। আরও কয়েকদিন এভাবে খাঁচায় বন্দি রাখলে হয়তো মারা যেত। আমরা আনার পর দেরি না করে গাড়িতে করে দ্রুত মধুপুর গড়ে নিয়ে ছেড়ে দিয়েছি।’
ময়মনসিংহ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এ কে এম রুহুল আমিন বলেন, ‘বড় বাঘডাশা এই অঞ্চলে তেমন দেখা যায় না। এটির বৈজ্ঞানিক নাম Viverra zibetha. একটি বড় বাগডাশার গড় আয়ু ১৫ বছর পর্যন্ত হয়।’
তিনি বলেন, ‘কোনো প্রাণীকেই এভাবে আটক করা ঠিক না। তবু ভয় কিংবা আতঙ্কজনিত কারণে খাঁচায় বন্দি করলে বন বিভাগকে জানাতে হবে। পরে বন বিভাগের কর্মকর্তারা গিয়ে সেটিকে উদ্ধার করে গহীন বনে ছেড়ে দেবে। কারও বিরুদ্ধে কোনো প্রাণীকে আটক কিংবা নির্বিচারে অত্যাচার করে হত্যার তথ্য পেলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হই।’
গত বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে ঘাগড়া ইউনিয়নের মাইজহাটি গ্রামে জাল ফেলে প্রাণীটিকে আটক করা হয়।
ময়মনসিংহ রেঞ্জ অফিসের বন কর্মকর্তা মেজবাইল ইসলাম জানান, প্রাণীটিকে হেফাজতে নিয়ে প্রকৃতিতে অবমুক্ত করতে বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই গ্রামে যান বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তারা। ওই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমানের নির্দেশ না থাকায় সেদিন প্রাণীটিকে নিতে পারেননি তারা। এরপর আরও কয়েক দফা চেষ্টা করলেও প্রাণীটিকে দেয়া হয়নি।
বন কর্মকর্তা বলেন, “প্রাণীটিকে আমাদের কাছে হস্তান্তর না করায় পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছিলাম, প্রাণীটির ক্ষতি হলে যার কাছে সেটি আছে, তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবুও প্রাণীটি আমাদের দেয়া হয়নি। পরে ‘নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকম’ ওই গ্রামের ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমানের ভাগিনা লুৎফর রহমানের সঙ্গে সমঝোতা করে যোগাযোগের মাধ্যমে প্রাণীটি ফিরিয়ে দিতে রাজি করেন। এর পরই বন কর্মকর্তারা শনিবার সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে গিয়ে প্রাণীটিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।’’