২৮ দিন বন্ধ থাকার পর আজ সোমবার খুলছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের হল। তবে অনলাইনে ক্লাস শুরু হবে এক দিন পর, মঙ্গলবার থেকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের ডাকা জরুরি সিন্ডিকেট সভায় রোববার সন্ধ্যায় এই সিদ্ধান্ত হয়।
সভা শেষে রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন এই সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে এখন সশরীরে ক্লাস হবে না। তবে সরকারি কোনো বিধিনিষেধ না থাকলে ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে সশরীরে ক্লাস শুরু হবে।’
গত ১৬ জানুয়ারি উপাচার্যকে অবরুদ্ধের কারণে শিক্ষার্থীদের পুলিশের পিটুনির জেরে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
সে রাত থেকেই উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। হল ছাড়ার নির্দেশ অমান্য করে হলেই অবস্থান নেন তাদের একাংশ।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সঙ্গে আলোচনার পর শনিবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
এর আগে শুক্রবার ক্যাম্পাসে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী উপাচার্যকে দায়িত্ব পালন করে যেতে পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানান রেজিস্ট্রার।
ক্যাম্পাসে গিয়ে শিক্ষক ও উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরুর পরামর্শও দেন মন্ত্রী।
আর আন্দোলনে থাকা শিক্ষার্থীদের মন্ত্রী আশ্বাস দিয়ে যান, উপাচার্যের পদত্যাগের তাদের যে দাবি, তা জানানো হবে রাষ্ট্রপতিকে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রপতিই নেবেন।
আন্দোলন শুরুর ২৮ দিন পর রোববার সকালে নিজ কার্যালয়ে যান উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন।
যা ঘটেছিল
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজুন্নেসা হলের প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা গত ১৬ জানুয়ারি আইআইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। পুলিশ গিয়ে তাদের লাঠিপেটা করে উপাচার্যকে মুক্ত করে নিয়ে যান তার বাসভবনে।
ঘণ্টাব্যাপী পুলিশ-শিক্ষার্থী সংঘর্ষের পর রাত থেকে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। উপাচার্য জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডেকে পরদিন থেকে হল ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেন। ওই দিনই তিনি শেষ অফিস করেন।
১৭ জানুয়ারি থেকে উপাচার্যের বাসার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। ১৯ জানুয়ারি থেকে সেখানে অনশনে বসেন ২৪ শিক্ষার্থী। এক দিনের জন্য উপাচার্যের বাসভবনের বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিলেন তারা। উপাচার্যের কার্যালয়েও তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়।
অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের আশ্বাসে ২৬ জানুয়ারি শিক্ষার্থীরা অনশন ভাঙেন। ওই দিনই উপাচার্যের বাসার সামনের ব্যারিকেড তুলে নেন তারা।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ক্যাম্পাসে গেলে বাসা থেকে বের হয়ে কার্যালয়ে যান ফরিদ; বৈঠক করেন মন্ত্রীর সঙ্গে।
ওই বৈঠকেই উপাচার্যকে দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন শিক্ষামন্ত্রী।