ভারতের কর্ণাটকে স্কুল-কলেজগুলোতে হিজাব নিয়ে সাম্প্রতিক বিতর্ককে ক্ষতিকারক বলে উল্লেখ করেছে স্থানীয় কারওয়ারের রামকৃষ্ণ আশ্রম। একইসঙ্গে বলা হয়েছে, এটি অপ্রয়োজনীয় এবং শান্তি ও সম্প্রীতির স্বার্থে নয়।
আশ্রমের শীর্ষ পুরোহিত স্বামী ভাবেশানন্দ এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘সিনিয়র আইনজীবী দেবদত্ত কামাত, যিনি স্কুল-কলেজে হিজাব পরার অধিকারের জন্য লড়াইরত শিক্ষার্থীদের রক্ষায় মুসলিম ধর্মগ্রন্থ উদ্ধৃত করার জন্য ডানপন্থী ভাষ্যকারদের লক্ষ্যবস্তু হয়েছেন, তিনি হিন্দু ধর্মের কোনো ক্ষতি করেননি।’
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘স্কুল-কলেজে মুসলিম মেয়েদের ড্রেস কোড নিয়ে একটি অপ্রয়োজনীয় আলোচনা চলছে এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরে এই বিষয়ে একটি তুমুল বিতর্কের সাক্ষী হয়ে আমি বেদনা অনুভব করছি। এটি অবশ্যই সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতির স্বার্থে নয়।’
স্বামী ভাবেশানন্দ বলেন, ‘আমি এটা দেখে আরও বেদনাহত যে দেবদত্ত কামাতের নাম এই বিতর্কে টেনে আনা হচ্ছে। কারণ তিনি একজন আইনজীবী হিসেবে আদালতে একটি পক্ষের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন।
‘কিছু মানুষ তাকে হিন্দু ধর্মের বিরুদ্ধে একটি বিষয়কে সমর্থন করছে বলে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে। এ ধারণাটি একেবারেই অবাঞ্ছিত এবং ভিত্তিহীন। আদালতে মক্কেলের যুক্তি প্রতিষ্ঠিত করা তার প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবীর পেশাদারি দায়িত্ব। এটাকে হিন্দু ধর্মের বিরুদ্ধে একটি কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা যাবে না।’
কামাতের ওপর আক্রমণকে অযৌক্তিক বলে উল্লেখ করেন প্রধান পুরোহিত। বলেন, ‘এটি পরিকল্পিত ভিত্তিহীন প্রচার, যা কিছু অসাধু মানুষ দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, কর্ণাটকের উদুপি-তে স্কুল ও কলেজে হিজাব না পরার আদেশের বিরুদ্ধে কর্ণাটক হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে ছাত্রীদের আবেদনের পক্ষে সওয়াল করছেন দেবদত্ত কামাত। তিনি বৃহস্পতিবার কর্ণাটক হাইকোর্টে বলেন, ‘ধর্মীয় হেড স্কার্ফ তাদের সংস্কৃতির অংশ, যাকে প্রভাবিত করা যায় না। ‘আমাদের মৌলিক অধিকার কলেজ উন্নয়ন কমিটির কাছে জিম্মি। সরকারি আদেশ বলছে হেড স্কার্ফ নিষিদ্ধ করা সংবিধানের ২৫ ধারার লঙ্ঘন নয়। সরকারি আদেশ রাজ্য সরকার যতটা বলেছে ততটা নির্দোষ নয়।’
তিনি কোরআনের কিছু আয়াত উদ্ধৃত করেছেন যেখানে বলা হয়েছে যে, পরিবারের ঘনিষ্ঠ সদস্যদের ছাড়া অন্য কারো সামনে মহিলাদের মাথা ঢেকে রাখা বাধ্যতামূলক।