দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রবেশ মুখে ছিল কয়েকটি ভাসমান খাবারের দোকান। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব দোকান তুলে দিয়েছে। এরপর জায়গাটিতে থাকা ময়লা পরিষ্কার করে সেখানে উন্মুক্ত লাইব্রেরি বানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা তানভীর হাসান সৈকত।
রোববার লাইব্রেরিটি উদ্বোধন করা হবে। উদ্যানের গেটে বা টিএসসিতে যারা আড্ডা দিতে আসেন, তারা এখান থেকে পড়তে পারবেন বই।
জায়গাটির সৌন্দর্য বাড়াতে লাইব্রেরির আশেপাশে নান্দনিকভাবে সাজানো হয়েছে রং তুলি দিয়ে। পাশেই আঁকা বঙ্গবন্ধুর তর্জনী উঁচু করা ছবি, স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ।
সৈকত বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক সদস্য ছিলেন। বর্তমানে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সমাজসেবা বিষয়ক উপ-সম্পাদকের পদে রয়েছেন।
এমন উদ্যোগের বিষয়ে সৈকত বলেন, ‘জায়গাটি ঐতিহাসিকভাবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ হলেও এতদিন দোকানপাট থাকার কারণে অনেক নোংরা ছিল। পরিষ্কার করে আমি জায়গাটিতে চেয়ার-টেবিলের ব্যবস্থা করেছি। এখানে বসে মানুষ বিনামূল্যে বই পড়তে পারবেন। তবে বই পড়ে আবার এখানে রেখে যেতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আমাদের অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি চিন্তা, চেতনা, মনন তথা সামাজিক উন্নয়নের সমান অগ্রগতির প্রয়োজন আছে। চিন্তার বিকাশের বড় হাতিয়ার হলো বই। উন্নত বিশ্বে রাস্তার ধারে কিংবা পার্কের সবুজ ছায়ায় বই পড়ার প্রচলন বহু পুরনো হলেও দুঃখজনকভাবে আমাদের দেশে নেই।’
প্রত্যেকটি জেলায় লাইব্রেরি বানানোর স্বপ্ন আছে বলে জানান সৈকত।
সৈকত বলেন, ‘এখন কেবল একটির মধ্য দিয়ে সেই স্বপ্নের যাত্রা শুরু করেছি। যদি কেউ আমার কাজে সহযোগিতা করতে চান তাহলে তারা আমাকে বই দিতে পারেন। এভাবে লাইব্রেরিটিকে সমৃদ্ধ করা গেলে আরও বিভিন্ন জায়গায় এ ধরনের উদ্যোগ নেয়া সহজ হবে।’
করোনা সংক্রমণ রুখতে দেশে লকডাউনের শুরুতে টিএসসিতে খাবার রান্না করে ছিন্নমূল মানুষকে টানা ১২১ দিন খাইয়েছিলেন সৈকত। বন্যা কবলিত সুনামগঞ্জে গিয়েছিলেন ত্রাণ নিয়ে। সৈকতের এসব উদ্যোগ প্রশংসিত হয়েছে সব মহলে।