বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সড়কে ৫ ভাই নিহত: যা জানালেন পিকআপ চালক

  •    
  • ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৬:৫৯

র‌্যাব মুখপাত্র বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃত চালক সাইফুল ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়াই পিকআপটি চালাচ্ছিল। এভাবে দুই বছর ধরে সে পিকআপ, চান্দের গাড়ি, তিন টন ট্রাকসহ বিভিন্ন ধরনের গাড়ি চালানোর কাজে নিয়োজিত ছিল।’

কুয়াশার মাঝে অতিরিক্ত গতিতে পিকআপ চালানোর কারণেই কক্সবাজারের চকরিয়ার মালুমঘাট এলাকায় একই পরিবারের সাত সদস্যকে চাপা দিয়েছিলেন চালক।

গ্রেপ্তারের পর র‌্যাবের কাছে এমন স্বীকারোক্তি দিয়েছেন চালক সহিদুল ইসলাম সাইফুল। ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়াই পিকআপটি চালাচ্ছিলেন তিনি। পিকআপের কাগজও ছিল মেয়াদোত্তীর্ণ।

শনিবার কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, ‘গত ৮ ফেব্রুয়ারি ভোরবেলা কক্সবাজারের চকরিয়ার মালুমঘাট নামক স্থানে বাবার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পূজা শেষ করে একই পরিবারের ৯ ভাইবোন চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক পার হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় কক্সবাজারমুখী বেপরোয়া গতির একটি পিকআপ তাদের চাপা দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

‘ঘটনাস্থলে চার ভাই অনুপম সুশীল, নিরুপম সুশীল, দীপক সুশীল ও চম্পক সুশীল মারা যান। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আরেক ভাই স্মরণ সুশীল। আর গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ভাই রক্তিম সুশীল এবং বোন হীরা সুশীল। রক্তিম সুশীল চট্টগ্রাম মহানগরীর একটি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন।

‘এ ঘটনায় নিহতদের ভাই প্লাবন সুশীল বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা পিকআপ চালককে আসামি করে কক্সবাজারের চকরিয়া থানায় সড়ক পরিবহন আইনে একটি মামলা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১৫-এর অভিযানে শুক্রবার রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে পিকআপ চালক সহিদুল ইসলাম সাইফুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে পিকআপটির চাবিও উদ্ধার করা হয়।’

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত পিকআপ চালক সাইফুল নিহতদের গাড়ি চাপা দেয়ার কথা স্বীকার করেছেন বলেও জানান খন্দকার আল মঈন।

তিনি আরও জানান, ঘটনার দিন ভোরে পিকআপটির মালিকের ছেলে তারেক ও ভাগিনা রবিউলসহ চকরিয়া থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে সবজি নিয়ে যাচ্ছিলেন সাইফুল। রাস্তায় ঘন কুয়াশার মধ্যেও বেপরোয়া গতিতে পিকআপটি চালাচ্ছিলেন তিনি।

কুয়াশা ও অতিরিক্ত গতির কারণেই মালুমঘাট বাজারের নার্সারি গেটের সামনে রাস্তা পার হতে অপেক্ষমাণ পরিবারটিকে দেখতে না পেয়ে তাদের চাপা দেন চালক সাইফুল। চাপা দেয়ার পর কিছুটা সামনে গিয়ে গাড়ি থামিয়ে আহতদের কাছে যান তিনি। কিন্তু মালিকের ছেলে তারেকের নির্দেশে সাইফুল সেখান থেকে দ্রুত পিকআপ নিয়ে চলে যান।

মালুমঘাট বাজারের একটি স্থানে গাড়িটি থামিয়ে মালিককে ফোন করে দুর্ঘটনার বিষয়টি জানান সাইফুল। মালিকের নির্দেশে তিনি ডুলাহাজরায় গিয়ে পিকআপটি রেখে লোকাল বাসে চড়ে চকরিয়া গিয়ে মালিকের সঙ্গে দেখা করেন।

পিকআপ মালিক মাহমুদুল আত্মগোপনে চলে যাওয়ার পরামর্শ দিলে সাইফুল প্রথমে তার আগের কর্মস্থল বান্দরবানের লামার রাবার বাগান ও পরে আত্মগোপনের উদ্দেশে ঢাকায় আসেন।

র‌্যাব মুখপাত্র বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃত চালক সাইফুল ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়াই পিকআপটি চালাচ্ছিল। এভাবে দুই বছর ধরে সে পিকআপ, চান্দের গাড়ি, তিন টন ট্রাকসহ বিভিন্ন ধরনের গাড়ি চালানোর কাজে নিয়োজিত ছিল। দুর্ঘটনার এক সপ্তাহ আগে সে ওই পিকআপটি মালিকের কাছ থেকে দৈনিক ৫০০ টাকা মজুরিতে চালানো শুরু করে।

র‌্যাব মুখপাত্র জানান, গাড়ি চালানোর আগে বান্দরবানের লামায় একটি রাবার বাগানে চাকরি করতেন সাইফুল। আর পিকআপের মালিক মাহামুদুল করিম চকরিয়ায় সবজি পরিবহনের ব্যবসা করেন। তিনি চকরিয়ার আড়ত থেকে কক্সবাজার সদর ও মহেশখালী এলাকায় সবজি সরবরাহ করেন। তার ছেলে তারেক সবজি সরবরাহের তদারক করেন এবং ভাগিনা রবিউল তারেকের সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। ২০১৬ সালে পিকআপটি কেনার পর থেকে মূলত সবজি পরিবহনেই পিকআপটি ব্যবহার করা হতো। চার বছর ধরে ওই পিকআপের ফিটনেস ও ট্যাক্স টোকেন এবং তিন বছর ধরে রুট পারমিট মেয়াদোত্তীর্ণ ছিল।

দুর্ঘটনা-পরবর্তী সময়ে পিকআপের মালিক, তার ছেলে তারেক ও ভাগিনা রবিউলও আত্মগোপনে রয়েছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাব মুখপাত্র।

এ বিভাগের আরো খবর