বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কৃষকের আত্মহত্যায় আ. লীগ নেতার দায় দেখছে কৃষক দল

  •    
  • ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৩:০৭

কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতা মজিবর মেম্বারের প্ররোচনায় ফাঁসির মঞ্চ বানিয়ে আত্মহত্যা করেন কৃষক শফিউদ্দিন। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে এক কৃষকের আত্মহত্যার জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকে দায়ী করেছে কৃষক দল।

দলটির সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের দাবি, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা ও নয়াবিল ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার মজিবর রহমানের কারণে আত্মহত্যা করেছেন কৃষক শফিউদ্দিন।

গত ২ ফেব্রুয়ারি ভোররাতে নালিতাবাড়ী উপজেলার মানিকচাঁদ গ্রামের কৃষক শফিউদ্দিন ফসলের মাঠে ফাঁসির মঞ্চ বানিয়ে আত্মহত্যা করেন। সেচ পাম্প নিয়ে দ্বন্দ্বে প্রতিপক্ষের চাপে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার।

সফিউদ্দিনের মেয়ে সুমনা খাতুন নিউজবাংলাকে জানান, জমিতে পানি দেয়ার জন্য তার বাবা পল্লী বিদ্যুতের কাছে সাবমারসিবল পাম্প বসানোর অনুমতি চান, কিন্তু অনুমতি পাননি। পরে অনুমতি ছাড়াই ৭০ হাজার টাকায় তিনি নিজের জমিতে পাম্প বসান।

কিছুদিন পর একই গ্রামের আহাম্মদ আলী ওই পাম্প থেকে আধা কিলোমিটার দূরে নিজের বাড়িতে পাম্প বসানোর জন্য পল্লী বিদ্যুতের অনুমতি নেন, তবে আহাম্মদ পানির ব্যবসা করার জন্য সফিউদ্দিনদের বাড়ির কাছে আরেকজনের জমিতে পাম্প বসানোর প্রক্রিয়া শুরু করেন। আহাম্মদকে পাম্প সরিয়ে নিতে তাগিদ দেন সফিউদ্দিন।

বিষয়টি নিয়ে মজিবর মেম্বার সালিশ ডাকেন। সেখানে ক্ষতিপূরণ হিসেবে সফিউদ্দিনকে ২০ হাজার টাকা দেয়ার জন্য বলেন আহাম্মদ আলীকে। একই সঙ্গে তাকে পাম্প তুলে নিতে বলেন।

সুমনার অভিযোগ, সালিশের দুই দিন পরই মজিবর ও আহাম্মদ ক্ষতিপূরণের ২০ হাজার টাকা ফেরত চেয়ে হুমকি দেন। এরপর তার বাবা আত্মহত্যা করেন। মৃত্যুর আগে স্বজনদের বলে যান, তার মৃত্যুর জন্য মজিবর ও আহাম্মদ দায়ী থাকবেন।

আত্মহত্যার ঘটনার পর ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে নালিতাবাড়ী থানায় মজিবর রহমান মেম্বারসহ দুজনকে আসামি করে মামলা করেন সফিউদ্দিনের বড় ছেলে আনোয়ার হোসেন।

শুক্রবার সন্ধ্যায় মানিকচাঁদপাড়া গ্রামে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন কৃষক দলের সভাপতি। এর আগে বিকেলে কৃষক শফিউদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে তার স্বজনদের সমবেদনা জানান কৃষক দল ও বিএনপির নেতারা। ওই সময় শফিউদ্দিনের স্ত্রী আবেদা বেগমের হাতে ৩০ হাজার টাকা দেন কৃষক দল ও বিএনপি নেতারা।

পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় মজিবর মেম্বারকে দোষী করেন কৃষক দল সভাপতি তুহিন। শেরপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হযরত আলীর বাসায় এ মতবিনিময়ে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতা মজিবর মেম্বারের কারণে ফাঁসির মঞ্চ বানিয়ে আত্মহত্যা করেন কৃষক শফিউদ্দিন। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের কোনো শ্রেণি-পেশার মানুষ এখন ভালো নেই। বিশেষ করে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে কৃষক সমাজ। কারণ তারা ফসলের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না। শুধু কৃষক নয়, দেশে অন্যান্য মানুষেরও আত্মাহুতির ঘটনা বেড়েছে।’

তিনি বলেন, ‘কৃষকের আত্মহত্যার কারণ বর্তমানে দেশের অনির্বাচিত সরকার। এ সরকার সার, কীটনাশক, ডিজেল, বিদ্যুৎসহ কৃষি উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত সব সামগ্রীর দাম কয়েক গুণ বাড়িয়েছে। প্রত্যেকটি কৃষি উৎপাদন পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি করে এ সরকার কৃষকদের হতাশ করেছে।

‘এ হতাশার কারণেই আজকের আত্মাহুতির মতো ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনা থেকে আমরা পরিত্রাণ চাই। সব শ্রেণি-পেশার মানুষ এ সরকার থেকে মুক্তি চায়।’

সংবাদ সম্মেলনে কৃষক দল নেতা ও বগুড়া-৪ আসনের এমপি মোশাররফ হোসেন, কৃষক দলের সহসভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার আকন্দ, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে মজিবর মেম্বার তার ‍বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, এ ঘটনায় কোনোভাবেই দায়ী নন।

আহাম্মদের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

এ বিভাগের আরো খবর