বাসভবনের ফটকের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান বা কোনো ব্যারিকেড ছিল না। ক্যাম্পাসে বড় কোনো বিক্ষোভও ছিল না। তবু ঘর থেকে বের হচ্ছিলেন না শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।
অবশেষে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসতে ২৬ দিন পর ঘর থেকে বের হলেন তিনি।
বাসভবন থেকে বের হয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি নিজ কার্যালয়ে যান। সেখানে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। সঙ্গে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, কোষাধ্যক্ষসহ অন্য শিক্ষকরা।
এক হল প্রভোস্টের অপসারণের দাবিতে উপাচার্যকে গত ১৬ জানুয়ারি ক্যাম্পাসে অবরুদ্ধ করেছিলেন শিক্ষার্থীরা। সেই সন্ধ্যায় পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে উপাচার্যকে মুক্ত করে তার বাসভবনে নিয়ে যায়। এর পর থেকে আর বাসা থেকে বের হননি উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন।
পুলিশি হামলা উপাচার্যের নির্দেশে হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে ওই রাত থেকেই তার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।
১৯ জানুয়ারি থেকে সেখানে অনশন শুরু করেন ২৪ শিক্ষার্থী। এরপর উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ব্যারিকেড দিয়ে অন্যদের প্রবেশ বন্ধ করে দেন তারা। এক দিনের জন্য ওই ভবনের বিদ্যুৎ-পানির লাইনও কেটে দেয়া হয়।
২৬ জানুয়ারি অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের অনুরোধে অনশন ভাঙার পর উপাচার্যের বাসার সামনে থেকে অবস্থান ও ব্যারিকেড তুলে নেন শিক্ষার্থীরা। এর পরও বাসা থেকে বের হননি ফরিদ উদ্দিন। বাসায় থেকেই চালিয়ে নিচ্ছিলেন দাপ্তরিক কাজ।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, এই উপাচার্যকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন তারা। পদত্যাগ করার আগে তিনি ক্যাম্পাসে গেলে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ আরও বেড়ে যেতে পারে।
এদিকে উপাচার্যসহ শিক্ষকদের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর বৈঠকের পর কোষাধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘আলোচনায় শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন যে উপাচার্যের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্ত হবে। এরপর আচার্য ব্যবস্থা নেবেন। এর আগ পর্যন্ত উপাচার্যকে দায়িত্ব পালন করে যেতে বলেছেন তিনি।’
শিক্ষামন্ত্রীর বরাত দিয়ে আনোয়ারুল ইসলাম আরও বলেন, ‘তিনি বলেছেন ক্যাম্পাসে যে ঘটনা ঘটেছে তা নিন্দনীয়। উপাচার্য এ ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না। এ ঘটনার জন্য উপাচার্যকে দুঃখ প্রকাশ করারও অনুরোধ করেছেন মন্ত্রী।’