‘ভালোবাসার জন্য আমি হাতের মুঠোয় প্রাণ নিয়েছি/ দুরন্ত ষাঁড়ের চোখে বেঁধেছি লাল কাপড়/ বিশ্বসংসার তন্ন তন্ন করে খুঁজে এনেছি ১০৮টা নীল পদ্ম’- তবুও কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রেয়সী বরুণা কথা রাখেননি।
১১ ফেব্রুয়ারি দিনটির বিশেষত্ব সেখানেই। কথা না রাখার আক্ষেপ ঘুচিয়ে আজ প্রিয়জনের কাছে প্রতিজ্ঞা করার দিন। চলমান ভালোবাসা সপ্তাহের পঞ্চম দিনটি হলো প্রমিজ ডে বা কথা দেয়ার দিন। দিনটিতে একে অপরের সঙ্গে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন ভালোবাসার মানুষরা।
‘সন্ধ্যেবেলা ঝগড়া হবে, হবে দুই বিছানা আলাদা/ হপ্তা হপ্তা কথা বন্ধ মধ্যরাতে আচমকা মিলন/ পাগলি, তোমার সঙ্গে ব্রহ্মচারী জীবন কাটাব/ পাগলী, তোমার সঙ্গে আদম ইভ কাটাব জীবন’- এভাবেই নিজের প্রেয়সীর সঙ্গে জীবন কাটানোর কথা দিয়েছেন কবি জয় গোস্বামী।
জীবনে যত ঝড়ঝাপ্টা আসুক না কেন, পাড়ি দিতে হোক বন্ধুর পথ, তবুও একে অপরের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেয় প্রেমিক-প্রেমিকারা বা বন্ধুরা। দিনটিতে আজীবন প্রেয়সীর যত্ন-আত্তি নেয়া এবং তাকে নিঃশর্তভাবে ভালোবাসার কথা জানান প্রেমিকরা।
প্রতিশ্রুতি যে শুধু ভালোবাসারই হবে, তেমন নয়। মানুষে মানুষে যে কোনো সম্পর্ককে আরও সুন্দর করে তোলার জন্য কথা দিয়ে কথা রাখাকে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়।
বিশ্বাস, ভালবাসা, আনুগত্য এবং একান্ত বিষয়গুলো আড়াল রাখার পারস্পরিক প্রতিশ্রুতির মধ্য দিয়ে তৈরি হয় মানুষে মানুষে সম্পর্ক। তাই প্রেমিক-প্রেমিকাদের পাশাপাশি বন্ধুরাও দিনটি উদযাপন করেন।
বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তি না থাকলেও প্রচলিত আছে, আজকের দিনে কথা দিলে, তা পূরণ হয়। তবে প্রতিশ্রুতি দিয়েও জীবনের নানা টানাপোড়েনে অনেক সময় তা রাখা সম্ভব হয় না। ফলে সম্পর্ক হয় মলিন, কখনও ভেঙেও যায়। তাই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়ার সময় সেই প্রতিজ্ঞা রাখা সম্ভব হবে কি না তা ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেয়াটা হবে বুদ্ধিমত্তার পরিচায়ক।