বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ইউএনওর বিরুদ্ধে মেম্বারকে লাঞ্ছিতের অভিযোগ

  •    
  • ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৬:৩৩

জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘বিষয়টা আমি জানি না। ইউএনও একজন প্রতিনিধির কলার চেপে ধরতে পারেন না। বিষয়টি যেহেতু এখন শুনলাম, খোঁজ-খবর নেব। সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরান শাহরীয়ারের বিরুদ্ধে এক ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা ও তার ভাই ইউপি সদস্যকে লাঞ্ছিতের অভিযোগ উঠেছে।

সদর উপজেলার জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোসেন বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

ইউনিয়নের ডলুরা গ্রামের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বুধবার বিকেলে লাঞ্ছনার এ ঘটনা ঘটেছে বলে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

লিখিত অভিযোগে মকবুল হোসেন বলেন, ‘বুধবার বিকেল আনুমানিক ৪টার দিকে সদর উপজেলার ইউএনও ইমরান শাহরীয়ার ও তার সহকারী তহশীলদার কামাল হোসেন, সার্ভেয়ার আনোয়ার হোসেনসহ আরও কয়েকজন কর্মকর্তা আসেন। কাইয়ারগাঁও বাজারের পশ্চিম পাশে নদীর পারে লিজ না থাকা নৌকাগুলো বাঁধা থাকে।

গত ৬ ফেব্রুয়ারি একটি খালি নৌকাকে তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। টাকা জোগাড় করে নৌকাটি এনে আবার সেখানে রাখা হয়। বুধবার নদীর পাড়ে গেলে ইউএনওসহ তার সঙ্গে থাকা অন্যরা আমাকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন এবং আমার মোটরসাইকেল পাশের শহীদ মিনারে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে আমার বড় ভাই জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম গিয়ে প্রতিবাদ করলে আমার শার্টের কলার চেপে ধরে উপস্থিত কয়েক শ লোকের সামনে লাঞ্ছিত করা হয়।’

অভিযোগে তিনি আরও উল্লেখ করেন, ৬ ফেব্রুয়ারি কাইয়ারগাঁও গ্রামের ফারুক মিয়া নামে আরও এক ব্যক্তিকে মারধর করেন ইউএনও শাহরীয়ার। প্রায়ই তিনি মানুষকে ধরে এনে মারধর করেন।

নিউজবাংলাকে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে নিউনিয়ন সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, ‘পাথর তোলা বন্ধ হওয়ায় গত ছয় মাস ধরে নৌকা বন্ধ আছে। দুই-তিন দিন আগে সেখানে একজনের নৌকা রঙ করিয়া রাখা ছিল, উনি (ইউএনও) আইসা তিন লাখ টাকা জরিমানা করছে। এই জায়গায় কিছু মাল আনলোডের মেশিন আছিন, এগুলাও জরিমানা করছে। যার মধ্যে আমার ভাইয়ের একটা মেশিনও ছিল, সেটিও জরিমানা করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বুধবার তাইন আবার আসছিলেন, নিলামও আওয়ার পথে খায়েরগাঁও একালার ঘাটেও ওই নৌকাগুলা বাঁধা অবস্থায় ছিল। ওই সময় উনি বলে উঠলেন, এই নৌকাগুলা এই জায়গায় কেন? পরে আমার ভাই মকবুলে বলে, স্যার নৌকা আমরা রাখতাম কই, আর আপনেত এইগুলা জরিমানা করেছেনই। অন্য কোনো জায়গাত রাখলে চুরি অই যাইব। এই কথা কইতেই ইউএনও সাহেব আমার ভাইরে চড় মারছোইন। আমি ওই সময় বাজারে আমার দোকানও আছলাম।

‘আমি ঘটনা শুনছি তারে লইয়া তাইন অকশনও গেছোইন। আমি গিয়া স্যারের লগে কথা কইলাম, এমন সময় আমার ছোট ভাই ভয় পাইয়া দৌড় দিসে। তার দৌড় দেয়ার পরে ইউএনও সাহেব আমারে কলারে ধইরা লাঞ্ছিত করছে। আর তার সাথে থাকা তফসিলদার ও সার্ভেয়ার আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছে। পরে কয়েকজন গিয়া আমার ভাইরে তুকাইয়া আনছে।’

নজরুল বলেন, ‘আমার ভাই যদি কোনো দোষ করে সেটির শাস্তি তাকে দেয়া হোক। তার দোষের জন্য আমি কেন মার খাব, আমি কেন শাস্তি পাব? আমাকে যেভাবে লাঞ্ছিত করা হইছে তার সাক্ষী আছে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান-মেম্বাররা।’

এ বিষয়ে নিউজবাংলাকে জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুল মালেক বলেন, ‘ঘটনাটা অইছে তারা একটা পাবলিক ধরিয়া লইয়া আইছে। পরে লোকটা দৌড় দিসে। দৌড় দেয়ায় ইউএনও তার সাথের লোকেরা মেম্বাররে খুব বেজ্জতি করছে, শার্টের কলারও ধরিয়া খারাপ আচরণ করছে। ইকানো কয়ে শ মানুষ আছিন, সাংবাদিকরা আছিন, তারা দেখছে সবতা।’

ঘটনাস্থলে থাকা মহিলা মেম্বার পেয়ারা বেগম বলেন, ‘আমি ঘটনার সময় আছলাম। তারা তর্ক করিয়া ইউএনও সাহেব মেম্বার সাহেবের কলারও ধরছে। আমরা ইটার নিন্দা জানাই।’

জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রশিদ আহমদ বলেন, ‘একটা সমস্যা অইছিল। কিন্তু ইটাত পরে মিটমাট করিয়া দেয়া অইগেছে। এর বেশি কিচ্ছু আমি কইতে পারতাম না।’

এ বিষয়ে জানতে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান শাহরীয়ারে সঙ্গে দেখা করলে তিনি অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমি ইউএনও হয়ে কেন মেম্বারের কলারে ধরব? আমি কাজে গেছি কাজ করিয়া আইছি। এমন কোনো ভেজালই হয়নি, এগুলো মিথ্যা।’

নিউজবাংলাকে জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘বিষয়টা আমি জানি না। ইউএনও একজন প্রতিনিধির কলার চেপে ধরতে পারেন না। বিষয়টি যেহেতু এখন শুনলাম, খোঁজ-খবর নেব। সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর