রংপুরের পীরগাছায় চুরির অভিযোগে শিশুকে ইনজেকশনের সুচ দিয়ে নির্যাতনের মামলায় এক যুবককে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
পীরগাছা আমলি আদালতের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে জাহিদুল ইসলামকে কারাগারে পাঠানো হয়। পশু চিকিৎসক জাহিদুলের বাড়ি উপজেলার নবু পাঠান পাড়ায়।
পীরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর শুকুর মিয়া নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
শিশুটির মা সাবিনা খাতুন বলেন, ‘৩১ জানুয়ারি দিনোত পাশের বাড়ির আশরাফুলের বেটা বাঁধনের সাতে (সঙ্গে) হামার বেটা আবু জাহিদ খেলা খেলাইসে। ওই দিন নাকি জাহিদুলের বাড়ি থাকি টাকা চুরি হয়চে। সেটা আমার বেটার ওপর দোষ দিচে।
‘সেদিন রাইত সাড়ে ১২টার দিকে ওমরা (তারা) আসি জাহিদকে ঘুম থাকি তুলিয়ে চর-থাপ্পড় দিতে দিতে মার শুরু করে। চুরির কতা স্বীকার করে নাই জন্য হাতোত-ঠ্যাঙগোত (হাতে-পায়ে) ইনজেকশনের সুঁই দিয়ে ফোড়াইচে। টাকা তো সে চুরি করে নাই, স্বীকার করবে কী? হাত-পা ধরি কান্নাকাটি করছি, শোনে নাই।’
সাবিনা আরও বলেন, ‘পরদিন গ্রামের ডাক্তার আনি চিকিৎসা করাই কিন্তু ভালো হয় না। পরে ৭ তারিখ হাসপাতালোত নিয়ে ভর্তি করাই। বৃহস্পতিবার বাড়ি আসচি।
‘চৈলের (ছেলের) বাপ নাই। এতিম চৈলোক কত কষ্ট করি বড় করোচি (করছি)। দোষ করে নাই তাও এমন করি নির্যাতন করিল ক্যানে? আমি মামলা দিচি ওমার যেন বিচার হয়।’
১২ বছর বয়সী আবু জাহিদ নিউজবাংলাকে বলে, ‘বাঁধন আর আমি এক সাতে দিনোত খেলা খেলাইচি। টাকা তো আমি নেই নাই। আমাকে এমনি এমনি দোষ দেওচে (দিচ্ছে)। যখন সুচ দিচে খুব ব্যথা পাইচি, চিল্লাইচি, কষ্ট হইচে খুব।’
এ ঘটনায় ৮ ফেব্রুয়ারি পীরগাছা থানায় চারজনের নামে মামলা করেন সাবিনা।
ওসি শুকুর বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকেলে জাহিদুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। সন্ধ্যার দিকে তাকে আদালতে তোলা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ ঘটনায় জড়িত বাকিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’