বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সাগর-রুনি হত্যার তদন্ত দ্রুত শেষ করা যাবে: র‍্যাব

  •    
  • ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৩:০১

র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্তে যেসব তথ্য-উপাত্ত ও আলামত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা দরকার, র‍্যাব তা করেছে। আমরা আশা করছি খুব দ্র্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে পারব।’

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার তদন্ত দ্রুত শেষ করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছে তদন্তকারী সংস্থা র‌্যাব।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে শুক্রবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আশার কথা জানায় বাহিনীটি।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের বাসায় খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি। এ ঘটনার দুই মাস পর হত্যা মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় র‌্যাব, তবে প্রায় ১০ বছরেও তদন্ত শেষ করতে পারেনি বাহিনীটি।

আদালতে সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা পিছিয়েছে ৮৫ বার। এমন বাস্তবতায় মামলার অগ্রগতি নিয়ে কথা বলেন র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘র‌্যাব যখন মামলার তদন্ত করে, তখন সর্বোচ্চ পেশাদারত্বের মাধ্যমে করে থাকে। সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত র‌্যাব সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েই তদন্ত করছে। এখন পর্যন্ত ১৬০ জনের সাক্ষ্য নিয়েছে র‌্যাব।’

কমান্ডার মঈন বলেন, ‘সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্তে যেসব তথ্য-উপাত্ত ও আলামত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা দরকার, র‌্যাব তা করেছে। আমরা আশা করছি, খুব দ্র্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে পারব।

‘র‌্যাব সব সময় চেষ্টা করে তদন্তে যেন নিরপরাধ কোনো ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত না হয়।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন আমরা সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্তভার গ্রহণ করেছি দুই মাস পর। আমরা রিমান্ডে এনে অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। সরকার এতটাই গুরুত্ব দিয়েছে, এই মামলার তথ্য-উপাত্ত প্রমাণের জন্য আলামত পরীক্ষা করতে দেশের বাইরে পাঠানো হয়েছে। আলামত পরীক্ষার প্রতিবেদন পেতে সময় লেগেছে। তদন্ত চলমান।’

সাগর-রুনি হত্যার ১০ বছর হচ্ছে, আর কত দেরি হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়া সম্ভব জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘র‌্যাব এই মামলা তদন্ত করছে আদালতের নির্দেশে। আমরা সব দিক বিবেচনায় তদন্ত করছি।’

এমন চাঞ্চল্যকর মামলার তদন্ত করার মতো সক্ষমতা কি তবে র‌্যাবের নেই? জবাবে কমান্ডার মঈন বলেন, ‘র‌্যাব অনেক চাঞ্চল্যকর মামলার তদন্ত করেছে। র‌্যাব কখনো নিজে থেকে মামলার তদন্ত করে না। আদালত দিলেই কেবল তদন্ত করে।

‘আমরা যে আজ একটি অভিযান পরিচালনা করেছি, এটার আলামত ও আসামি থানায় সোপর্দ করা হবে। সুতরাং নিয়মতান্ত্রিক উপায়েই র‌্যাব সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত করছে।’

বাদীপক্ষ মামলার তদন্তে র‌্যাবের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলছেন, এমন বক্তব্যও আসছে, এ প্রসঙ্গে র‌্যাব গণমাধ্যম শাখার পরিচালক বলেন, ‘এ মামলার তদন্তের অগ্রগতি প্রতিটি ডেটে আদালতকে অবহিত করছি। আমরা এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো অভিযোগ বা বক্তব্য পাইনি। আদালতও আমাদের বলেনি। এখানে তদন্ত নিয়ে খারাপ লাগার কিছু নেই।

‘বাংলাদেশের কয়টি মামলায় আলামত পরীক্ষা করে আসামিকে শনাক্তের চেষ্টা করা হয়। আমরা কিন্তু সেটি করছি। আমরা চাই এটি দ্রুত শেষ হোক। নিরপরাধ কেউ সাজা না পাক।’

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ভোরে নিজ বাসায় খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি। এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় হত্যা মামলা করা হয়।

মামলাটি ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল থেকে তদন্ত করছে র‌্যাব। তদন্তে অগ্রগতি নিয়ে র‌্যাবের কমান্ডার বলেন, ‘আমরা এ পর্যন্ত ১৬০ জনের জবানবন্দি নিয়েছি। গ্রেপ্তার আটজনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

‘ডিএনএ টেস্টের নমুনা আমেরিকায় পাঠানো হয়েছে, যেটার ফলাফল এখনও আসেনি।’

বিচারিক আদালত সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার সর্বশেষ তারিখ ছিল। সেদিন জমা দিতে না পারায় র‌্যাবের পক্ষ থেকে আবারও সময়ের আবেদন করা হয়।

আদালত ২৩ ফেব্রুয়ারি নতুন তারিখ ঠিক করেন। এ নিয়ে ৮৫ বার পেছাল আলোচিত মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার তারিখ।

শেরে বাংলা নগর থানায় করা মামলায় রুনির বন্ধু তানভীর রহমানসহ মোট আসামির সংখ্যা আট। অন্য আসামিরা হলেন বাড়ির সিকিউরিটি গার্ড এনাম আহমেদ (হুমায়ুন কবির), রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুণ, পলাশ রুদ্র পাল, তানভীর ও আবু সাঈদ।

আসামিদের প্রত্যেককে একাধিবার রিমান্ডে নেয়া হলেও তাদের মধ্যে কেউ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি।

৪৮ ঘণ্টা শেষ হয়নি এক দশকেও

ঘটনার পরই তখনকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তারের ঘোষণা দেন। সন্দেহভাজন হিসেবে আটজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়, কিন্তু খুনিরা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ৪৮ ঘণ্টা সময়সীমা পার হওয়ার পর ১৩ ফেব্রুয়ারি তখনকার আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, জোড়া হত্যাকাণ্ডের তদন্তে ‘প্রণিধানযোগ্য’ অগ্রগতি হয়েছে।

কয়েক দিন পর ২৬ ফেব্রুয়ারি তখনকার ডিবির ডিসি ও ডিএমপির মুখপাত্র এবং বর্তমানে স্পেশাল ব্রাঞ্চের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলাম বলেছিলেন, হত্যাকাণ্ডের মোটিভ সম্পর্কে তারা নিশ্চিত হয়েছেন। দ্রুততম সময়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হবে।

মনিরুল ইসলামের এ বক্তব্যের দুই দিন পর ২৮ ফেব্রুয়ারি খুনিদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করে হাইকোর্ট। ঘটনার প্রায় দুই মাস পর ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্টে হাজির হয়ে সাগর-রুনি হত্যা তদন্তে তারা ব্যর্থ হয়েছেন বলে স্বীকার করেন মনিরুল ইসলাম।

ওই দিনই উচ্চ আদালত র‌্যাবকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়ে বাহিনীর ডিজিকে নির্দেশ দেন একজন সুদক্ষ, অভিজ্ঞ এবং এএসপি পদমর্যাদার নিচে নয় এমন কর্মকর্তাকে দিয়ে মামলার তদন্ত করাতে।

হাইকোর্টের নির্দেশনার পর র‌্যাবের আবেদনে ভিসেরা রিপোর্টের জন্য ২৬ এপ্রিল সাগর-রুনির মরদেহ কবর থেকে তুলে আবার ময়নাতদন্ত করা হয়।

মেহেরুন রুনির ভাই নওশের রোমান ও মা নুরুন নাহার মির্জা এবং সাগর সরওয়ারের মা সালেহা মনিরসহ দুই পরিবারের অনেক সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেছিলেন, ‘আমাদের তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্ত শেষ করেই প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে।’

এক দশক ধরে সাংবাদিকরা তাদের দুই সহকর্মীকে হত্যার বিচার দাবি করে আসছেন। বিভিন্ন কর্মসূচিও পালন করছেন তারা।

এ বছরও দুই সাংবাদিকের মৃত্যুবার্ষিকী ঘিরে তিন দিনের কর্মসূচি দিয়েছে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)। মোমবাতি প্রজ্বালন, ডিআরইউ চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশের পাশাপাশি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেবে সাংবাদিকদের এ সংগঠন।

এ বিভাগের আরো খবর