মূল দাবি উপাচার্যের পদত্যাগ হলেও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলার প্রত্যাহারসহ বেশ কিছু আনুষাঙ্গিক দাবি আবারও শিক্ষামন্ত্রীকে জানাবেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির ক্যাম্পাসে যাওয়ার খবরে বৃহস্পতিবার রাতে বৈঠকে দাবিগুলো গুছিয়ে নেন তারা।
শিক্ষার্থীরা জানান, ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে অপসারণ করে উপাচার্য পদের সম্মান ও মর্যাদা পুনরুদ্ধারে মন্ত্রী আন্তরিক ভূমিকা রাখবেন বলে তাদের আশা।
বৈঠক শেষে আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ইয়াছির সরকার এসব তথ্য নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি শুক্রবার সকাল ৮টায় সিলেটের উদ্দেশ্যে ঢাকা থেকে রওনা হবেন। মন্ত্রীর একান্ত সচিব আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন জানিয়েছেন, বিকেল ৩টায় মন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যাবেন।
আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র ইয়াসির বলেন, ‘গত ১৬ জানুয়ারি থেকে আমরা উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছি... আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর যে নারকীয় পুলিশি হামলার ঘটনা ঘটেছে, স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে তা নজিরবিহীন।
‘আমাদের বহু শিক্ষার্থীর শরীরে এখনও লাঠি-বুলেট-বোমার আঘাত ও জখম আছে। তারা ভয়াল সেই দিনের দুঃসহ স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছে। অথচ এর জন্য দায়ী ফরিদ উদ্দিন আহমেদ এখনও জনগণের টাকায় পরিচালিত বিশ্ববিদ্যালয়ের আলিশান বাসভবনে সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন।’
ইয়াসির জানান, তাদের সব দাবি মেনে নেয়া হবে বলে সরকারের আশ্বাস নিয়ে এসেছিলেন অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী অধ্যাপক ইয়াসমিন হক। সেই আশ্বাসেই শিক্ষার্থীরা অনশন ভেঙেছেন। অথচ এখনও উপাচার্যের অপসারণ হয়নি। শিক্ষার্থীদের নামে হওয়া দুটি মামলাও প্রত্যাহার হয়নি।
শিক্ষার্থীদের বন্ধ হওয়া ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও বিকাশ অ্যাকাউন্টগুলো চালু হয়নি বলেও জানান তিনি।
ইয়াসির বলেন, ‘আন্দোলনের শুরু থেকেই শিক্ষামন্ত্রী সরাসরি আমাদের সঙ্গে ফোনে ও ভিডিও কলে আন্তরিকভাবে কথা বলেছেন। আমরা বিনীতভাবে আহ্বান করব, একই রকম আন্তরিকতার সঙ্গে তিনি আমাদের দাবিগুলো সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরে শিক্ষার্থীদের এই হয়রানি ও মানসিক যন্ত্রণা থেকে মুক্ত করার পদক্ষেপ নেবেন।’
তিনি জানান, উপাচার্যের বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণায় প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থীর জীবন স্থবির হয়ে আছে। অনলাইনেও হচ্ছে না ক্লাস-পরীক্ষা। শিক্ষা কার্যক্রম অবিলম্বে চালুর জন্য শিক্ষামন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ চাইবেন তারা।
ইয়াসির বলেন, ‘ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে অপসারণ করে উপাচার্য পদের সম্মান ও মর্যাদা পুনরুদ্ধারে তিনি (মন্ত্রী) ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখবেন- এটি কেবল শাবিপ্রবিই নয়, বাংলাদেশের সব শিক্ষার্থীর দাবি।’