বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ন্যায্যতার ভিত্তিতে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের দাবি

  •    
  • ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৮:৪১

বায়রার সাবেক সভাপতি মো. আবুল বাশার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, মালয়েশিয়া শ্রমবাজারকে কেন্দ্র করে একটি স্বার্থান্বেষী মহল আগের মতো মুষ্টিমেয় কয়েকজনের দখলে নিতে অপতৎপরতা চালিয়ে যাওয়ার ধৃষ্টতা দেখিয়ে যাচ্ছেন।’

অন্যান্য দেশ থেকে যে প্রক্রিয়ায় মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগ করা হয়, ঠিক একই প্রক্রিয়ায় ন্যায্যতার ভিত্তিতে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের দাবি জানিয়েছে জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বায়রা।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান বায়রার সাবেক সভাপতি মো. আবুল বাশার।

আবুল বাশার বলেন, ‘গত ৭ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী অভিবাসন খাতে অধিকতর স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা ও প্রতারণারোধে যে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন সেগুলোকে আমরা স্বাগত জানাই। আমরা বায়রার সব সদস্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ওই নির্দেশনা মেনে চলতে বদ্ধপরিকর।’

তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গত ১৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে সমঝোতা স্মারক সইয়ের মাধ্যমে পুনরায় বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানির সুবর্ণ সুযোগ তৈরি হয়েছে। এ জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’

বায়রার সাবেক সভাপতি বলেন, ‘এ বিষয়ে মন্ত্রী ইমরান আহমেদ বারবার দেশবাসীকে আশ্বস্ত করেছেন যে তিনি কোনো ধরনের সিন্ডিকেটকে প্রশ্রয় দেবেন না। মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রীর সিন্ডিকেটের প্রস্তাবসংবলিত চিঠির উত্তরেও তিনি সব বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সিকে সম্পৃক্ত করার কথা উল্লেখ করে অত্যন্ত বিচক্ষণতার পরিচয় রেখেছেন।’

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, মালয়েশিয়া শ্রমবাজারকে কেন্দ্র করে একটি স্বার্থান্বেষী মহল আগের মতো মুষ্টিমেয় কয়েকজনের দখলে নিতে অপতৎপরতা চালিয়ে যাওয়ার ধৃষ্টতা দেখিয়ে যাচ্ছেন।

সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চালু হওয়া ২০১৬ সালের মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার অনিয়ম, দুর্নীতি ও অতিরিক্ত অভিবাসন ব্যয়ের কারণে মাত্র দেড় বছরের মাথায় মাহাথির মোহাম্মদের নেতৃত্বে গঠিত মালয়েশিয়ার সরকার বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয়া বন্ধ করে দেয়। বাতিল করে এসপিপিএ নামক ১০ এজেন্সির অটো ডিস্ট্রিবিউশন পদ্ধতির সিন্ডিকেটের মাধ্যমে শুরু হওয়া শ্রমবাজার এবং অনিয়মের ফলে বাজারটি বন্ধ হয়ে যায়।

বায়রার সাবেক সভাপতি বলেন, ‘উভয় ক্ষেত্রেই ক্ষতিগ্রস্ত হয় এই দেশের নিরীহ কর্মীরা, দেশ-বিদেশের বিভিন্ন মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচারের কারণে নষ্ট হয় দেশের সুনাম, বাংলাদেশ বঞ্চিত হয় ধারাবাহিকভাবে এই দেশের গরিব-নিরীহ কর্মহীন মানুষের বৈদেশিক কর্মসংস্থান থেকে।

‘এবারও সম্ভাব্য ২৫ সিন্ডিকেটের সদস্যরা অতীতের পুনরাবৃত্তি ঘটানোর আপ্রাণ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় এবারও সহযোগী বা সাব-এজেন্ট হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে একই মর্যাদার আরও ২৫০টি রিক্রুটিং লাইসেন্সকে, যাতে কর্তৃপক্ষকে বাগে আনতে তাদের পক্ষে অনেকটা সহজ হয়,’ যোগ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘সিন্ডিকেটের সম্ভাব্য সদস্যরা তাদের অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সফল হলে বিদেশগামী নিরীহ কর্মী ও সিংহভাগ বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক এবারও তাদের লালসার শিকার হবেন বলে আমরা আশঙ্কা করছি।’

আবুল বাশার বলেন, ‘স্বার্থান্বেষী মহলের মাধ্যমে সিন্ডিকেট বাস্তবায়িত হলে আগের মতো অনিয়ম, দুর্নীতি, অভিবাসন ব্যয় বাড়বে, গুটিকয়েক স্বার্থান্বেষী মহলের দেশবিরোধী ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ হবে, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী প্রতি উপজেলায় এক হাজার কর্মীর বিদেশে কর্মসংস্থান বাস্তবায়ন হবে না। অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে দেশি-বিদেশী সংবাদমাধ্যমে ব্যাপক নেতিবাচক প্রচারণা সৃষ্টি হবে, যা ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। ফলে সরকার ও দেশের সুনাম ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

‘সীমিতসংখ্যক রিক্রুটিং এজেন্সি কাজ করলে কর্মী পাঠানোর গতি যেমন কমে যাবে, তেমনি সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও শত শত রিক্রুটিং এজেন্সি তাদের ব্যবসার ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে, আগের মতো যেকোনো সময় বাজারটি বন্ধ হয়ে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘জনশক্তি রপ্তানি সেক্টরে অনিয়ম, অরাজকতা, পারস্পরিক রেষারেষি বৃদ্ধি পাবে- মালয়েশিয়া সিন্ডিকেট ছাড়া অন্য আরও ১৩টি দেশের মতো বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেবে এটাই স্বাভাবিক হওয়া বাঞ্ছনীয়। কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিশেষ নিয়ম বা সিন্ডিকেট প্রথা আমাদের স্বাধীন দেশের জন্য অমর্যাদাকর। আন্তর্জাতিকভাবে মালয়েশিয়া শ্রমিকদের অতিরিক্ত অভিবাসন ব্যয় ও শ্রমিক শোষণের কারণে তাদের কিছু কোম্পানির প্রডাক্ট কানাডা, আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে; যা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের শ্রমবাজারকে প্রভাবিত করবে।

অন্যদিকে সব বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সিকে সম্পৃক্ত করে কর্তৃপক্ষের নজরদারির মাধ্যমে বাজারটি উন্মুক্তের ব্যবস্থা করলে অভিবাসন ব্যয় নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের স্বার্থ সংরক্ষিত হবে বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।

সংবাদ সম্মেলনে বায়রার সাবেক সভাপতি নূর আলী, সাবেক মহাসচিব আলী হায়দার, শামীম আহমেদ চৌধুরীসহ বায়রার সদস্যরাসহ মালয়েশিয়ার কয়েকটি রিক্রুটিং এজেন্সি ও সংগঠনের নেতারা জুমে যুক্ত ছিলেন।

এ বিভাগের আরো খবর