বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

খায়রুজ্জামানকে দ্রুত দেশে আনা হবে: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

  •    
  • ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৭:৫০

শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘আমরা আশা করছি, খুব দ্রুত তাকে ফিরিয়ে আনতে পারবো। তারপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয় মিলে সিদ্ধান্ত নেবে মামলাটির কোন পার্যায়ে তাকে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে অথবা মামলাটি কীভাবে পুনরুদ্ধার করা হবে।’

১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর জেলহত্যার দায়ে অভিযুক্ত মালয়েশিয়ায় আটক বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার অবসরপ্রাপ্ত মেজর মোহাম্মদ খায়রুজ্জামানকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।

বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।

স্থানীয় সময় বুধবার মালয়েশিয়ার সেলাঙ্গর রাজ্যের আমপাংয়ের একটি বাসা থেকে খায়রুজ্জামানকে আটক করে দেশটির পুলিশ।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘খায়রুজ্জামানকে ডিপোটেশন সেন্টারে কারান্তরীণ করে রাখা হয়েছে। আমি যতদূর বুঝি আবারও তাকে সশরীরে জিজ্ঞাসাবাদ করার ও মামলাটিকে খতিয়ে দেখার সুযোগ আছে। সেটা আইন মন্ত্রণালয় ভালো বলতে পারবে। যত দ্রুত সম্ভব আমরা তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি।’

তিনি বলেন, ‘মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চিঠিতে জানিয়েছে, অভিবাসন সংক্রান্ত আইন ভাঙায় তাকে আটক করা হয়েছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘শরণার্থী কার্ড তার আছে কি না আমি জানি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানতাম খায়রুজ্জামান মালয়েশিয়ায় আছেন। মালয়েশিয়া থেকে বের হতে পারেননি বা এ রকম কিছু। এ ধরনের অপরাধীদের অনেক দেশ আশ্রয় দিয়েছে, আপনার দেখেছেন। এ রকম সুযোগ মালয়েশিয়ায় নেই।

‘আমরা আশা করছি, খুব দ্রুত তাকে ফিরিয়ে আনতে পারবো। তারপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয় মিলে সিদ্ধান্ত নেবে মামলাটির কোন পর্যায়ে তাকে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে অথবা মামলাটি কীভাবে পুনরুদ্ধার করা হবে।’

এদিকে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হামজাহ জাইনুদিন স্থানীয় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে নিয়ম মেনেই আটক করা হয়েছে বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনারকে।

বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ার ইংরেজি দৈনিক দ্য স্টারের অনলাইন সংস্করণের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনারকে আটকের বিষয়টি জানেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হামজাহ জাইনুদিন বলেন, ‘আইন মেনেই তাকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ রয়েছে ও তাকে আটকে তার নিজের দেশ থেকে অনুরোধ ছিল। তবে ঠিক কী অভিযোগ তার বিরুদ্ধে আছে সেই ব্যাপারে কিছু জানাননি তিনি।’

খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি সরকারের সময়কালে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রদূত ছিলেন খায়রুজ্জামান। জাতীয় চার নেতাকে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর হত্যার ঘটনায় করা মামলায় তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল।

এদিকে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, খায়রুজ্জামানকে আটকের খবর পাওয়ার পর তার মুক্তি চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছেন মালয়েশিয়ার আইনজীবীরা।

খায়রুজ্জামানের মুক্তির আবেদন জানিয়ে লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, ‘আমরা অভিবাসন বিভাগকে জানাতে চাই, মোহাম্মদ খায়রুজ্জামান (ইউএনএইচসিআর কার্ড নম্বর ৩৫৪-১০সি০২২৬৭) নামের বাংলাদেশি নাগরিককে মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগ কোনো যুক্তিসংগত কারণ ছাড়াই আটক করেছে।’

ইউএনএইচসিআরের কার্ডের অনুলিপিও এই লিগ্যাল নোটিশে যুক্ত করা হয়। খায়রুজ্জামানকে ছেড়ে দেয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটামও দেয়া হয় এতে।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে দায়িত্ব গ্রহণের পর খায়রুজ্জামানকে ঢাকায় ফিরে আসতে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কিন্তু জীবননাশের শঙ্কায় খায়রুজ্জামান কুয়ালালামপুরে ইউএনএইচসিআরের কাছে যান ও মালয়েশিয়ায় তার অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার জন্য পরিচয়পত্র পান। এরপর থেকে তিনি শরণার্থী হিসেবে বাস করছিলেন।

খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীর জোট সরকারের আমলে ঢাকার একটি বিচারিক আদালত ২০০৪ সালে খায়রুজ্জামানকে খালাস দেয়।

জেল হত্যার পর খায়রুজ্জামানকে সেনাবাহিনী থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ দেয়া হয় এবং তিনি কায়রোতে বাংলাদেশ দূতাবাসে নিযুক্ত হন। সেখানে তিনি ১৯৭৬-১৯৮৩ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৯৬ সালের জুন মাসে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই খায়রুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং একই বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর অবসরে পাঠানো হয়। গ্রেপ্তার ও অবসর গ্রহণের আগে তিনি ফিলিপাইনের ম্যানিলায় ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

২০০১ সালের অক্টোবরের শেষে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই খায়রুজ্জামান জামিনে মুক্তি পান এবং ২০০৩ সালের ৪ মে তাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মহাপরিচালক হিসেবে পুনর্বহাল করা হয়।

খালাস পাওয়ার পর খায়রুজ্জামান অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি পান। এরপর তিনি মিয়ানমারে রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত হন। ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০০৭ সালের আগস্ট পর্যন্ত সেখানে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

২০০৭ সালের আগস্টে খায়রুজ্জামান আবার পূর্ণাঙ্গ সচিব পদে উন্নীত হন এবং প্রথম শ্রেণির রাষ্ট্রদূতের পদমর্যাদাসহ মালয়েশিয়ায় হাইকমিশনার হিসেবে নিযুক্ত হন।

এ বিভাগের আরো খবর