আদালতের আদেশের পরও গণসংহতি আন্দোলনকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন না দেয়ায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে হাইকোর্টে আবেদন করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।
বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সাকির আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া আবেদনটি করেন।
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া জানান, রাজনৈতিক দল হিসেবে গণসংহতি আন্দোলনের নিবন্ধন চেয়ে ২০১৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনে আবেদন করা হয়। নির্বাচন কমিশন ২০১৮ সালের ১৯ জুন এক পত্রের মাধ্যমে দলটির নিবন্ধন করা যাবে না বলে জানায়। পরবর্তী সময়ে গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষে প্রধান সমন্বয়ক মো. জোনায়েদ সাকি ২০১৮ সালে উচ্চ আদালতে রিট করেন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত ২০১৯ সালের ১১ এপ্রিল আদেশ দেয় এবং রায় ও আদেশের অনুলিপি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে নিবন্ধন দেয়ার আইনগত প্রক্রিয়া শেষ করার নির্দেশ দেয়া হয়।
পরে গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষ থেকে ওই রায় ও আদেশের সত্যায়িত কপি যথাসময়ে নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হয় এবং আদালত থেকেও নিয়ম অনুযায়ী রায় ও আদেশের কপি পাঠানো হয়।
তবে আদালতের সুস্পষ্ট রায় ও নির্দেশ থাকলেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচন কমিশন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এরপর বিভিন্ন সময়ে ওই রাজনৈতিক দলের পক্ষে বারবার যোগাযোগ করেও ফল মেলেনি। এ জন্য ২০২১ সালের ১০ অক্টোবর আইনজীবীর মাধ্যমে আদালত অবমাননার নোটিশ দেয়া হয়।
নোটিশ পাওয়ার পর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও নির্বাচন কমিশন কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষে জোনায়েদ সাকি পুনরায় সিইসি কে এম নুরুল হুদার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার কারণে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা চেয়ে আবেদন করেন।
এ প্রসঙ্গে জোনায়েদ সাকি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ভেবেছি আদালতের নির্দেশে নির্বাচন কমিশন তার কাজটি করবে। কিন্তু তারপরও না করায় গত বছরের ১০ অক্টোবর আমরা আইনজীবীর মাধ্যমে আদালত অবমাননার নোটিশ দিই। জানানো হয়, আপনারা কোনো পদক্ষেপ না নিলে আদালত অবমাননার মামলা করব।’
তারপরও নির্বাচন কমিশন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে জানান জোনায়েদ সাকি।
তিনি বলেন, ‘এই কমিশন বিদায় নেয়ার পর্যায়ে চলে এসেছে। আদালতের নির্দেশ মান্য না করে, বরং অবমাননা করে তারা বিদায় নিচ্ছে। তাই প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে তার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা চেয়ে আবেদন করেছি।’