কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার মৃগা ইউনিয়নে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানের সমর্থকদের ওপর হামলায় ৫ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও গুরুতর তিনজনকে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
উপজেলার মৃগা ইউনিয়নের লাইমপাশা গ্রামে বুধবার রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
মৃগা ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান দারুল ইসলামের অভিযোগ, ভোটে হেরে বর্তমান চেয়ারম্যান কামরুল হাসান দুলালের সমর্থকরা এ হামলা চালিয়েছে।
তবে কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি দাবি করে চেয়ারম্যান কামরুল হাসান দুলাল বলেন, ‘হালকা একটু মারামারি হয়েছে।’
ইটনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল ইসলাম মোল্লা নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
আহত শাকিল ভূইয়ার ছোট ভাই বায়েজিদ অভিযোগ করে জানান, রাত ৯টার দিকে তার ভাতিজা লালন বাড়ি থেকে বের হয়ে মৃগা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান কামরুল হাসান দুলালের বাড়ির পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় চেয়ারম্যানের অফিস থেকে কয়েকজন লোক বের হয়ে তাকে ধরে নিয়ে অফিসের ভেতর চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে মারধর করে ঠোঁট ফাটিয়ে দেয়।
সেখান থেকে দৌড়ে বাড়িতে চলে যায় লালন। এরপর লাঠিসোঁটা নিয়ে তাদের বাড়িতে গিয়েও হামলা চালায় তারা।
এতে আহত হন লাইমপাশা গ্রামের ভূইয়া বাড়ির রেনু মিয়া, মহসিন মিয়া, শাকিল ভূইয়া, জাহাঙ্গীর ভূইয়া ও লালন ভূইয়া। তারা সবাই দারুল ইসলামের সমর্থক।
এর মধ্যে লালন আর রেনু মিয়াকে ইটনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। শাকিল, মহসিন ও জাহাঙ্গীরের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
নিউজবাংলাকে শাকিলের বড় ভাই মাসুদ রানা বলেন, ‘আমরা গত নির্বাচনে দুলাল চেয়ারম্যানের নির্বাচন করেছিলাম। এবার দারুল ইসলামের নির্বাচন করেছি। তিনি জয়ী হয়েছেন। নির্বাচনে পরাজিত হয়েই দুই দিন ধরে আমার লোকজনকে বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল দুলালের লোকজন। সেই ধারাবাহিকতায় এই অতর্কিত হামলা।’
নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান দারুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দুলাল চেয়ারম্যান পরাজিত হওয়ায় তার বাড়ির পাশে বসবাস করা আমার সমর্থকদের ওপর হামলা করা হয়েছে। শুধু আমার পক্ষে অবস্থান নেয়ার ফলে তাদের ওপর এই হামলা করা হয়েছে।’
হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে কামরুল হাসান দুলাল বলেন, ‘কারো বাড়িতে গিয়ে কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। ছোট বাচ্চাদের ঝামেলাকে কেন্দ্র করে দারুল ইসলামের লোকেরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমার বাড়ির সামনে এসে ডাকাডাকি করতে শুরু করলে আমার লোকেরা তাদের ধাওয়া দেয়। এ সময় হালকা একটু মারামারি হয়েছে। এতে কয়েকজন সামান্য আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। কিন্তু তারা সেটা ব্যাপকভাবে প্রচার করছে। আমার লোকজনও আহত হয়েছে।’
এ বিষয়ে ওসি কামরুল ইসলাম মোল্লা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এখনো কোনো পক্ষের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’