ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে দাবি করা চাঁদা না পেয়ে হোটেলে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ এনে দুই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
ঈশ্বরগঞ্জ থানায় মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে লিখিত অভিযোগ দেন হোটেলের মালিক সিদ্দিক মিয়া।
এর আগে সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা ও মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে দুই দফা হোটেলে হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় ক্যাশে থাকা ৭০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়া হয়।
নিউজবাংলাকে ঈশ্বরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জহিরুল ইসলাম মুন্না লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অভিযুক্তরা হলেন ময়মনসিংহ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য শরীফুজ্জামান আকন্দ রানা, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আ. গণি, বাবু মিয়া, ইমন, রানা মিয়া, জোবায়ের, মুরাদ মিয়া, শামীম, জহিরুল ইসলাম, নাজমুল ও রায়হান।
অভিযোগের বরাতে পরিদর্শক জহিরুল বলেন, ‘মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঈশ্বরগঞ্জ বাজারে একটি হোটেলে দুই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাসহ ১০ থেকে ১১ জন যুবক দা, লাঠি, হকিস্টিক ও লোহার রড নিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। কিন্তু মালিক টাকা না দেয়ায় ভাঙচুর চালানো হয়। এ সময় ক্যাশে থাকা ৭০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়া হয়।
‘তাদের ঠেকাতে গেলে হোটেলের মালিক সিদ্দিক মিয়া, তার ছেলে সাফায়াত হোসেন, কর্মচারী রুবেল, সোহাগ, নুরুদ্দিন, জুয়েল ও রুবেল আহত হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘হোটেল মালিকের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরেই এ ঘটনা ঘটেছে। কারণ সোমবার সন্ধ্যায় দুই স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা খাওয়ার জন্য রুটি চেয়েছিলেন। দোকানে ভিড় থাকায় খাবার দিতে দেরি হয়। তখন দোকানের আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনার জেরে পরদিন আবারও হামলার ঘটনা ঘটে।’
হোটেলের মালিক সিদ্দিক মিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মঙ্গলবার তারা দোকানে অতর্কিত হামলা ও ভাঙচুর করে ৭০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে। ভয় আর আতঙ্ক নিয়ে ১১ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছি।
এ ঘটনার বিচার চেয়ে তিনি বলেন, ‘এই হোটেলের টাকা দিয়েই আমার সংসার চালাতে হয়। এরা আমাকে নিঃস্ব করে দিয়েছে। আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই।’
এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের মিয়া বলেন, ‘ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। প্রমাণ মিললে অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আ. গণির মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি। নিউজবাংলার পরিচয় দিয়ে এসএমএস দিলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
অপর অভিযুক্ত জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সদস্য শরীফুজ্জামান আকন্দ রানা নিউবাংলাকে বলেন, ‘উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক গণির ভাই হোটেলে গণ্ডগোল করছে এ কথা শুনে আমি ঘটনাস্থলে যাই। তখন উপজেলা বিএনপির সেক্রেটারি হারুন অর রশিদ উপস্থিত ছিলেন। সবাই দেখেছে আমি হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করেছি কি না।
তাকে ফাঁসানোর জন্য কারও প্ররোচনায় এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে দাবি করেন তিনি।